✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
◼️ 1. প্রতিপাদস্থান কাকে বলে?
✅ উত্তর:কোনো স্থানের ঠিক বিপরীত দিকের স্থানকে তার প্রতিপাদস্থান বলা হয়।
পৃথিবীর কেন্দ্র অতিক্রম করে যদি একটি সরলরেখা টানা হয়, তাহলে সেই রেখার অপর প্রান্তেই প্রতিপাদস্থান থাকে।
অর্থাৎ, পৃথিবীর দুই পার্শ্বের যে দুই স্থান একে অপরের মুখোমুখি অবস্থানে থাকে, সেগুলো প্রতিপাদস্থান।
◼️ 2. জৈবিক আবহবিকার কী?
✅ উত্তর: জীবজন্তু ও উদ্ভিদের প্রভাবে শিলার ভাঙনকে জৈবিক আবহবিকার বলে।
গাছের শিকড় শিলায় ঢুকে চাপ সৃষ্টি করে ভাঙন ঘটায়।
এটি এক ধরনের ভৌত ও রাসায়নিক ক্ষয়।
◼️ 3. লোয়েন্স সমভূমি কীভাবে গঠিত হয়?
✅ উত্তর: হিমবাহ থেকে আগত সূক্ষ্ম পলি বাতাসে উড়ে জমে লোয়েন্স গঠিত হয়।
এই পলি পরে সমভূমিতে পড়ে স্তর তৈরি করে।
এটি অত্যন্ত উর্বর ও সমতল ভূমি।
◼️ 4. সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ জাতীয় উদ্ভিদের বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর: এদের ঠেসমূল থাকে যা জলমগ্ন অবস্থায় গাছকে দাঁড়াতে সাহায্য করে।
পাতা ঘন ও লবণ সহ্য করতে পারে।
জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম।
◼️ 5. নিরক্ষীয় তল বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর: পৃথিবীর ০° অক্ষাংশ বরাবর যে কাল্পনিক রেখা পৃথিবীকে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে ভাগ করে, তা নিরক্ষীয় তল।
এটি পৃথিবীর কেন্দ্রে অবস্থিত।
এ রেখা বরাবর দিন ও রাত সমান হয়।
◼️ 6. পশ্চিমবঙ্গের মালভূমি অঞ্চলের প্রধান নদীগুলি কী কী?
✅ উত্তর: এই অঞ্চলের প্রধান নদী হল দামোদর, কংসাবতী ও সুবর্ণরেখা।
এগুলো ছোটনাগপুর মালভূমি থেকে উৎপন্ন।
এদের জলপ্রবাহ খরস্রোতা।
◼️ 7. আন্তর্জাতিক তারিখরেখা কাকে বলে?
✅ উত্তর: ১৮০° দ্রাঘিমাংশ বরাবর বিস্তৃত একটি কাল্পনিক রেখা আন্তর্জাতিক তারিখরেখা।
এটি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর দিয়ে চলে গেছে।
এ রেখার এক পাশে তারিখ একদিন যোগ হয়, অন্য পাশে বিয়োগ হয়।
◼️ 8. সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চল বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর: যেসব অঞ্চলে নদী এখনও পলি জমা করে ভূমি তৈরি করছে, সেগুলো সক্রিয় বদ্বীপ অঞ্চল।
এখানে ভূমির আকৃতি নিয়মিত পরিবর্তিত হয়।
উদাহরণ: গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র বদ্বীপ।
◼️ 9. মোনাডনক কাকে বলে?
✅ উত্তর:সমপ্রায় ভূমির ওপর অপেক্ষাকৃত কঠিন শিলা দ্বারা গঠিত কম ক্ষয়প্রাপ্ত টিবির মতো আকৃতি বিশিষ্ট পাহাড়গুলিকে মোনাডনক বলে।
এটি অবশিষ্ট শিলা বা অবক্ষেপ।
প্রাকৃতিক ক্ষয়ের ফলে এটি গঠিত।
◼️ 10. পর্যায়ন কাকে বলে?
✅ উত্তর: বহির্জাত প্রক্রিয়া সমূহ ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয়কার্যের মাধ্যমে অবরোহন,
আরোহণ ও জৈবিক পদ্ধতিতে অসমতল এবং বন্ধুর প্রকৃতির ভূমি ভাগের উচ্চতার
পরিবর্তন ঘটিয়ে সমতল ভূমিতে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে পর্যায়ন বলা হয়।
পর্যায়ন বা Gradation হল আরোহন ও অবরোহন প্রক্রিয়ার মিলিত ফল।
◼️ 11. শিলায় মরচে পড়ে কেন?
✅ উত্তর: শিলায় থাকা লৌহ উপাদান বাতাসের অক্সিজেন ও জলের সংস্পর্শে অক্সিডাইজ হয়।
ফলে শিলায় মরচে পড়ে।
এটি এক ধরনের রাসায়নিক আবহবিকার।
◼️ 12. এলুভিয়েশন ও ইলুভিয়েশন প্রক্রিয়া কাকে বলে?
✅ উত্তর: এলুভিয়েশন হলো উপরের স্তর থেকে খনিজ পদার্থের অপসারণ।
ইলুভিয়েশন হলো নিচের স্তরে সেই পদার্থের জমা হওয়া।
এই দুটি মাটি গঠনের প্রক্রিয়া।
◼️ 13. তিনবিঘা করিডর কী?
✅ উত্তর: এটি একটি সরু জমি যা বাংলাদেশের দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা ছিটমহলকে বাংলাদেশের মূলভূমির সঙ্গে যুক্ত করে।
এটি ভারতের মধ্যে অবস্থিত।
ভারত নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশকে এটি ব্যবহার করতে দেয়।
◼️ 14. নরওয়েস্টার কী?
✅ উত্তর: নরওয়েস্টার হলো পশ্চিম বা উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা বজ্রযুক্ত ঝড়।
এটি গ্রীষ্মকালে বিশেষ করে এপ্রিল-মেতে হয়।
বাংলায় একে কালবৈশাখী বলা হয়।
◼️ 15. আবাদা কী?
✅ উত্তর: আবাদা হলো চাষের উপযোগী জমি।
এই জমিতে কৃষিকাজ করা যায়।
এটি উর্বর ও মানুষের ব্যবহারে আসে।
◼️ 16. তাল কী?
✅ উত্তর:কুমায়ুন হিমালয়ে হিমবাহ ক্ষয়কার্যের মাধ্যমে সৃষ্ট অবনমিত অংশগুলিতে জল জমে যে হ্রদের সৃষ্টি হয়। সেই হ্রদগুলিকে। স্থানীয় ভাষায় তাল বলে।
বর্ষাকালে তালে জল জমে থাকে।
এটি সাধারণত বন্যাপ্রবণ।
◼️ 17. মানচিত্র কাকে বলে?
✅ উত্তর: সমগ্র পৃথিবী অথবা এর কোনো অংশের প্রতিকৃতি সঠিক দিক অনুসারে নির্দিষ্ট স্কেলে সমতল কাগজের উপর সঠিক অভিক্ষেপের সাহায্যে উপস্থাপন করাকে মানচিত্র (map) বলে।
এতে নদী, পাহাড়, শহর ইত্যাদি চিহ্নিত থাকে।
এটি কাগজ বা স্ক্রিনে তৈরি হয়।
◼️ 18. ঠেসমূল কাকে বলে?
✅ উত্তর: যে শিকড় মাটির উপরে উঠে গাছকে ঠেস দিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখে, তাকে ঠেসমূল বলে।
ম্যানগ্রোভ গাছে এটি দেখা যায়।
এটি বায়ুর পরিবাহক হিসেবেও কাজ করে।
◼️ 19. পিলিন কী?
✅ উত্তর: পিলিন হলো আগ্নেয়গিরির ছাই ও ধ্বংসাবশেষে তৈরি ছোট শঙ্কু আকৃতির পাহাড়।
এটি দুর্বল প্রকৃতির।
বিস্ফোরক উদ্গীরণে পিলিন তৈরি হয়।
◼️ 20. হিউমিফিকেশন কাকে বলে?
✅ উত্তর: মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহ পচে জৈব পদার্থে পরিণত হওয়ার প্রক্রিয়াকে হিউমিফিকেশন বলে।
এর ফলে হিউমাস গঠিত হয়।
এটি মাটির উর্বরতা বাড়ায়।
◼️ 21. মোনাডনক কী?
✅ উত্তর: এটি একটি প্রাকৃতিক অবশিষ্ট শিলা বা পাহাড় যা ক্ষয়প্রাপ্ত পরিবেশেও টিকে থাকে।
প্রাকৃতিক শক্তির তুলনায় বেশি কঠিন হওয়ায় এটি বেঁচে যায়।
মোনাডনক দীর্ঘ সময়ে গঠিত হয়।
◼️ 22. কংসাবতী নদীর ওপর নির্মিত দুটি ব্যারেজ-এর নাম লেখো।
✅ উত্তর:
(i) মুকুটমণিপুর ব্যারেজ
(ii) খাতরা ব্যারেজ
এই ব্যারেজগুলি সেচ ও জলনিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়।
◼️ 23. টেরারোসা কী?
✅ উত্তর: টেরারোসা হলো চুনাপাথরের ওপর গঠিত লাল মৃত্তিকা।
এর রঙ লৌহ অক্সাইডের কারণে লাল।
এটি ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে দেখা যায়।
◼️ 24. বেনিওফ এলাকা কাকে বলে?
✅ উত্তর: বেনিওফ এলাকা হলো একটি ভূকম্প সক্রিয় অঞ্চল যেখানে একটি টেকটোনিক প্লেট অন্যটির নিচে চলে যায়।
এখানে গভীর ভূকম্প তৈরি হয়।
এটি নিমজ্জন অঞ্চলের একটি নির্দেশক।
◼️ 25. দাবানল কী?
✅ উত্তর: দাবানল হলো বনাঞ্চলে অগ্নিকাণ্ডের একটি ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ।
এটি শুষ্ক আবহাওয়া, বজ্রপাত বা মানুষের অসতর্কতার কারণে ঘটে।
দাবানলে প্রাণহানি ছাড়াও পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
◼️ 26. স্থানীয় সময় ও প্রমাণ সময়ের দুটি পার্থক্য লেখো।
✅ উত্তর:
(i) স্থানীয় সময় নির্ধারিত হয় নির্দিষ্ট দ্রাঘিমার উপর ভিত্তি করে; আর প্রমাণ সময় নির্ধারিত হয় একটি নির্দিষ্ট দেশের জন্য নির্ধারিত মূল দ্রাঘিমার মাধ্যমে।
(ii) স্থানীয় সময় ভৌগোলিক অবস্থানের সঙ্গে বদলায়, কিন্তু প্রমাণ সময় একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের জন্য সব জায়গায় এক থাকে।
◼️ 27. কোনো স্থান ও তার প্রতিপাদস্থানের মধ্যে সময়ের পার্থক্য কত এবং কেন?
✅ উত্তর: প্রতিপাদস্থান ও মূল স্থানের মধ্যে সময়ের পার্থক্য ১২ ঘণ্টা।
কারণ পৃথিবী ৩৬০° ঘুরতে ২৪ ঘণ্টা সময় নেয়, অর্থাৎ প্রতি ১৫° দ্রাঘিমায় ১ ঘণ্টা পার্থক্য হয়।
দুই স্থান বিপরীত দিকে ১৮০° দূরত্বে থাকায় পার্থক্য হয় ১২ ঘণ্টার।
◼️ 28. পশ্চিমবঙ্গে খারিফ শস্য ও রবি শস্য হিসেবে কী কী ধান উৎপাদিত হয়?
✅ উত্তর:
খারিফ ধান হিসেবে আমন ও আশ্বিন ধান উৎপন্ন হয় বর্ষাকালে।
রবি ধান হিসেবে বোরো ধান শীতকালীন সেচনির্ভর জমিতে উৎপাদিত হয়।
এই দুই ধরনের ধানই পশ্চিমবঙ্গের প্রধান খাদ্যশস্য।
◼️ 29. পশ্চিমবঙ্গের দুটি প্রতিবেশী দেশের নাম লেখো।
✅ উত্তর: পশ্চিমবঙ্গের দুটি প্রতিবেশী দেশ হল বাংলাদেশ ও ভুটান।
বাংলাদেশ পূর্ব দিকে এবং ভুটান উত্তর দিকে অবস্থিত।
এই দেশগুলোর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ভূ-সীমা ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক রয়েছে।
◼️ 30. পার্বত্য অঞ্চলের দুটি শৈলশিরা ও দুটি শৃঙ্গের নাম লেখো।
✅ উত্তর:
দুটি শৈলশিরা হলো হিমালয় ও দার্জিলিং হিমালয়।
দুটি শৃঙ্গ হলো কাঞ্চনজঙ্ঘা ও সিন্থেল্লা।
এই পর্বত ও শৃঙ্গগুলি পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশে অবস্থিত।
◼️ 31. তিস্তাকে 'ত্রাসের নদী' বলা হয় কেন?
✅ উত্তর: তিস্তা নদীতে আকস্মিক ও প্রবল বন্যা ঘটে, তাই একে ‘ত্রাসের নদী’ বলা হয়।
বর্ষাকালে এই নদী তার গতিপথ পাল্টায় ও বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত করে।
ফলে জনজীবন ও কৃষিকাজে ভয়াবহ ক্ষতি হয়।
◼️ অথবা, ম্যানগ্রোভ অরণ্যের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর:
(i) ম্যানগ্রোভ গাছের শ্বাসমূল (ঠেসমূল) পানির উপরে থাকে, যা অক্সিজেন গ্রহণে সাহায্য করে।
(ii) এরা লবণাক্ত জল সহ্য করতে পারে এবং জোয়ারের সময়ও টিকে থাকে।
◼️ 32. পৃথিবীর বৃহত্তম পর্বতবেষ্টিত মালভূমি কোনটি এবং সেটি কোন্ দুটি পর্বতের মাঝে রয়েছে?
✅ উত্তর:
তিব্বত মালভূমি পৃথিবীর বৃহত্তম পর্বতবেষ্টিত মালভূমি।
এটি হিমালয় ও কুনলুন পর্বতের মাঝে অবস্থিত।
◼️ 33. ম্যাগমা ও লাভার পার্থক্য কী?
✅ উত্তর:
(i) ম্যাগমা হল ভূত্বকের নীচে থাকা গলিত শিলা পদার্থ, আর লাভা হল ভূপৃষ্ঠে নির্গত সেই পদার্থ।
(ii) ম্যাগমা ভূগর্ভস্থ অবস্থায় থাকে, লাভা আগ্নেয়গিরি থেকে বেরিয়ে আসে।
◼️ 34. নিরক্ষরেখাকে বিষুবরেখা বলা হয় কেন?
✅ উত্তর:
নিরক্ষরেখা পৃথিবীকে উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে ভাগ করে।
এই রেখায় দিন ও রাত সমান হয় বলে একে বিষুবরেখা বলা হয়।
এটি পৃথিবীর ০° অক্ষাংশ রেখা।
◼️ 35. গ্রস্ত উপত্যকা কাকে বলে?
✅ উত্তর:দুটি চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ বসে গেলে যে অবনমিত অঞ্চলের সৃষ্টি হয়, তাকে গ্রস্ত উপত্যকা বলে।
এগুলি সাধারণত V বা U আকৃতির হয়।
এ ধরনের উপত্যকা পাহাড়ি অঞ্চলে দেখা যায়।
◼️ 36. বদ্বীপ কাকে বলে?
✅ উত্তর: বদ্বীপ হল নদীর মোহনায় পলিমাটি জমে যে ভূমিরূপ তৈরি হয়, যা দেখতে অনেকটা ইংরেজি "ব" অক্ষরের মতো বা গ্রিক অক্ষর ডেল্টার (Δ) মতো। নদী যখন হ্রদ, সাগর বা অন্য কোনো জলাশয়ে পতিত হয়, তখন তার স্রোতের বেগ কমে যাওয়ায় নদীবাহিত পলিমাটি, বালি ইত্যাদি সেখানে জমা হতে থাকে এবং এই দ্বীপের মতো ভূমিরূপ তৈরি করে, যাকে বদ্বীপ বলা হয়।
◼️ 37. কার্স্ট কী?
✅ উত্তর:
কার্স্ট হল চুনাপাথরের অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ জলের রাসায়নিক ক্ষয় দ্বারা গঠিত বিশেষ ভূমিরূপ।
এখানে গুহা, গর্ত, সিংকহোল ইত্যাদি সৃষ্টি হয়।
এ ধরনের ভূমি কার্স্ট টপোগ্রাফি নামে পরিচিত।
◼️ 38. দুর্গাপুরকে 'ভারতের রুঢ়' বলে কেন?
✅ উত্তর:
দুর্গাপুর একটি প্রধান শিল্পশহর, যেখানে ইস্পাত কারখানা, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র ও রেল ইঞ্জিন তৈরি কেন্দ্র আছে।
এই শিল্পঘন এলাকাটি জার্মানির রুঢ় অঞ্চলের সঙ্গে তুলনীয়।
তাই একে 'ভারতের রুঢ়' বলা হয়।
◼️ 39. বন্দর কাকে বলে?
✅ উত্তর:
বন্দর হল এমন এক স্থান, যেখানে জাহাজ ভিড়ে মাল ও যাত্রী ওঠানামা করে।
এগুলি নদী, সাগর বা উপকূলের ধারে গড়ে ওঠে।
কলকাতা ও হলদিয়া পশ্চিমবঙ্গের দুটি প্রধান বন্দর।
◼️ 40. হোর্স্ট ও গ্রাবেন কাকে বলে?
✅ উত্তর:
ভূত্বকের উচ্চ চাপের ফলে যদি মধ্যভাগ ধসে পড়ে, তাকে গ্রাবেন এবং পাশের উঁচু অংশকে হোর্স্ট বলা হয়।
গ্রাবেন হয় উপত্যকার মতো, আর হোর্স্ট হয় পর্বতের মতো।
এই ভূমিরূপগুলো ফল্টিং এর ফলে তৈরি হয়।
◼️ 41. ডেকান ট্র্যাপ কী?
✅ উত্তর:
ডেকান ট্র্যাপ হল প্রাচীন আগ্নেয়গিরির লাভা প্রবাহ দ্বারা গঠিত মালভূমি এলাকা।
এটি স্তরে স্তরে গঠিত, যেমন সিঁড়ির ধাপ।
ভারতের মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, ও তেলেঙ্গানায় এই অঞ্চল বিস্তৃত।
◼️ 42. ‘রেগোলিথ মৃত্তিকা সৃষ্টির একটি প্রক্রিয়া’ – এটি ব্যাখ্যা করো।
✅ উত্তর:
রেগোলিথ হল শিলার উপরে থাকা অগঠিত খনিজ ও জৈব উপাদানের স্তর।
এই স্তরটি বায়ু, জল ও তাপমাত্রার পরিবর্তনে শিলার উপরিভাগ ভেঙে তৈরি হয়।
এই ভাঙা পদার্থ পরবর্তীতে মৃত্তিকায় পরিণত হয়।
◼️ 43. রাসায়নিক আবহবিকারে শিলার কী কী পরিবর্তন ঘটে?
✅ উত্তর:
রাসায়নিক আবহবিকার শিলার খনিজ উপাদানকে ভেঙে দেয়।
জল, অক্সিজেন ও কার্বন ডাই-অক্সাইডের প্রভাবে শিলার গঠন পরিবর্তিত হয়।
ফলস্বরূপ, নতুন খনিজ ও মৃত্তিকা গঠিত হয়।
◼️ 44. বরাভূমি উচ্চভূমি বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর:
বরাভূমি উচ্চভূমি হল এমন একটি এলাকা, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে অনেক উঁচুতে অবস্থিত ও সমতল বা ঢালু হতে পারে।
এগুলি প্রাচীন শিলার তৈরি ও ক্ষয়ের দ্বারা গঠিত।
ডেকান মালভূমি একটি বরাভূমি উচ্চভূমির উদাহরণ।
◼️ অথবা, তরাই অঞ্চলের মাটির বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর:
তরাই অঞ্চলের মাটি গভীর, জলধারক ও পলিমাটির মিশ্রণ।
এ মাটিতে জৈব পদার্থ প্রচুর থাকে, তাই এটি অত্যন্ত উর্বর।
ধান ও আখ চাষের জন্য এ অঞ্চল উপযুক্ত।
◼️ 45. মালভূমি কয়প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর:
মালভূমি প্রধানত তিন প্রকার—আগ্নেয়, ক্ষয়জাত ও ভাঁজজাত।
আগ্নেয় মালভূমি লাভা জমে গঠিত, ক্ষয়জাত ক্ষয় প্রক্রিয়ায় এবং ভাঁজজাত টেকটোনিক গতির ফলে তৈরি হয়।
ডেকান মালভূমি একটি আগ্নেয় মালভূমি।
◼️ 46. ভূগাঠনিক সমভূমি কয়প্রকার ও কী কী?
✅ উত্তর:
ভূগাঠনিক সমভূমি তিন প্রকার—ক্ষয়জাত, গঠনজনিত ও আগ্নেয়।
ক্ষয়জাত সমভূমি ক্ষয়ের ফলে, গঠনজনিত ভূতাত্ত্বিক গঠনের ফলে এবং আগ্নেয় সমভূমি লাভা দ্বারা গঠিত হয়।
গঙ্গার সমভূমি একটি গঠনজনিত সমভূমি।
◼️ 47. কোন্ ফসলগুলিকে ‘সোনার তত্ত্ব’ ও ‘সোনালি পানীয়' বলা হয়?
✅ উত্তর:
পাটকে ‘সোনার তত্ত্ব’ এবং চা-কে ‘সোনালি পানীয়’ বলা হয়।
পাট রপ্তানিযোগ্য এবং চা অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
এই দুই ফসল ভারতের গর্ব।
◼️ 48. পাট শিল্পের দুটি সম্ভাবনার উল্লেখ করো।
✅ উত্তর:
(i) পরিবেশবান্ধব হওয়ায় পাটজাত দ্রব্যের চাহিদা বিশ্বব্যাপী বাড়ছে।
(ii) স্বল্পমূল্যে সহজলভ্য কাঁচামাল ও শ্রমশক্তি থাকায় এই শিল্পে রপ্তানির সম্ভাবনা বিশাল।
◼️ 49. গ্রস্ত উপত্যকা কাকে বলে?
✅ উত্তর: গ্রস্ত উপত্যকা হলো এমন একটি নিম্নভূমি যা দুটি উঁচু হরস্র্ট ব্লকের মাঝখানে অবস্থিত এবং ভূত্বকের টেকটনিক বলের কারণে গঠিত। এটি প্রায়শই ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায় দেখা যায় এবং নদী বা জলধারার প্রবাহকে প্রভাবিত করে।
◼️ 50. জলযোজন কী?
✅ উত্তর: জলযোজন হলো একটি রাসায়নিক আবহবিকার প্রক্রিয়া যেখানে খনিজ পদার্থ জল শোষণ করে তাদের গঠন ও ধর্ম পরিবর্তন করে। এই প্রক্রিয়ায় পাথর দুর্বল হয়ে যায় এবং মৃত্তিকা তৈরি হয়।
◼️ 51. বরেন্দ্রভূমি কী?
✅ উত্তর: বরেন্দ্রভূমি হলো পশ্চিমবঙ্গের উত্তরাংশে অবস্থিত একটি উঁচু, শুষ্ক ও লাল-কাঁকুরে মাটির অঞ্চল। এটি কৃষির পক্ষে তুলনামূলকভাবে কঠিন এবং ভূপ্রকৃতিগতভাবে পুরাতন মালভূমির অংশ।
◼️ 52. সামাজিক বনসৃজন কাকে বলে?
✅ উত্তর: সামাজিক বনসৃজন হলো একটি পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ, যেখানে সাধারণ মানুষ, সরকার ও বেসরকারি সংস্থা একত্রে বৃক্ষরোপণ ও বনায়ন কার্যক্রমে অংশ নেয়। এর ফলে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয় এবং জীবিকাও উন্নত হয়।
◼️ 53. আশ্বিনের ঝড় কাকে বলে?
✅ উত্তর: আশ্বিনের ঝড় হলো আশ্বিন মাসে (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এক ধরনের ঘূর্ণিঝড় যা পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে প্রবল ক্ষয়ক্ষতি ঘটায়। এটি কৃষিকাজে বিশেষত ধানের জন্য ক্ষতিকর হয়ে থাকে।
◼️ 54. প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা কী?
✅ উত্তর: প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা বা "Ring of Fire" হলো একটি ঘূর্ণাকার অঞ্চল যেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্প ঘটে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরের চারপাশ জুড়ে বিস্তৃত এবং অত্যন্ত ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয়।
◼️ 55. মহীভাবক আলোড়ন ও গিরিজনি আলোড়নের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
✅ উত্তর: মহীভাবক আলোড়ন অত্যন্ত ধীর গতির ও পুরাতন ভূ-গঠন প্রক্রিয়া, যা মহাদেশের প্রাথমিক রূপ দিয়েছে। গিরিজনি আলোড়ন তুলনামূলকভাবে নবীন ও দ্রুত, যা প্রধানত পর্বতের সৃষ্টি করে।
◼️ 56. প্রতিপাদস্থান কাকে বলে?
✅ উত্তর: প্রতিপাদস্থান হলো পৃথিবীর কোনো স্থানের বিপরীত পাশে অবস্থিত স্থান, যেটি পৃথিবীর কেন্দ্র ভেদ করে ঐ সরলরেখার অপর প্রান্তে পড়ে। এটি নির্ধারণ করতে স্থানাঙ্কের বিপরীত নির্ণয় করা হয়।
◼️ 57. নর'ওয়েস্টার (Nor'wester) কাকে বলে?
✅ উত্তর: নর'ওয়েস্টার হলো গ্রীষ্মকালে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও অসমে প্রচন্ড বৃষ্টি ও বজ্রপাতসহ বয়ে আসা কালবৈশাখী ঝড়। এটি শস্য ও জনজীবনে ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সাময়িক তাপপ্রবাহ উপশম করে।
◼️ 58. চিলেশন (Chelation) কী?
✅ উত্তর: চিলেশন হলো একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া যেখানে জৈব অ্যাসিড মেটাল আয়নের সঙ্গে বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে তাকে দ্রবীভূত করে। মৃত্তিকা গঠনে ও খনিজ পদার্থ ক্ষয় করার ক্ষেত্রে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
◼️ 59. মধ্যমা ভূমি (Median Mass) কী?
✅ উত্তর: মধ্যমা ভূমি হলো দুটি ভিন্ন পর্বতশ্রেণির মাঝখানে অবস্থিত একটি পুরাতন ও স্থিতিশীল ভূভাগ। এটি পর্বত গঠনের চেয়ে আগে সৃষ্টি হয়েছে এবং ভূতাত্ত্বিকভাবে কম সক্রিয় থাকে।
◼️ 60. শৈলশিরা কী?
✅ উত্তর: শৈলশিরা হলো পর্বতের দীর্ঘ সরু এবং উঁচু অংশ যা সাধারণত শিলাচ্যুতি ও টেকটনিক বলের প্রভাবে সৃষ্টি হয়। এটি পর্বতের রূপরেখা নির্ধারণ করে এবং অনেক সময় শৃঙ্গের ধারাও নির্দেশ করে।
◼️ 61. ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি কী?
✅ উত্তর: ব্যবচ্ছিন্ন মালভূমি হলো এমন একটি ভূপ্রকৃতি যা নদী বা ক্ষয়প্রক্রিয়ার কারণে ভেঙে ছোট ছোট অংশে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এটি সাধারণত পুরনো মালভূমির ক্ষয়িত অবস্থা নির্দেশ করে।
◼️ 62. ট্যালাস বা স্ক্রি কী?
✅ উত্তর: ট্যালাস বা স্ক্রি হলো পাহাড়ের ঢাল থেকে পড়ে আসা খণ্ডিত শিলাখণ্ডের স্তূপ যা নিচে জমা হয়। এটি ভূতাত্ত্বিক ক্ষয়প্রক্রিয়ার একটি চিহ্ন এবং ঢালযুক্ত এলাকায় বেশি দেখা যায়।
◼️ 63. পশ্চিমি ঝঞ্ঝা কী?
✅ উত্তর: পশ্চিমি ঝঞ্ঝা হলো ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলে উৎপন্ন একধরনের ঘূর্ণাবর্ত যা শীতকালে উত্তর-পশ্চিম ভারতসহ উপমহাদেশে প্রবেশ করে। এটি তুষারপাত ও বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে কৃষি ও আবহাওয়ায় প্রভাব ফেলে।
◼️ 64. সামাজিক বনসৃজন বলতে কী বোঝো?
✅ উত্তর: সামাজিক বনসৃজন বলতে বুঝায় এমন এক বনায়ন কর্মসূচি যেখানে সমাজের সাধারণ মানুষ সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে বৃক্ষরোপণ করে। এর মাধ্যমে পরিবেশ সংরক্ষণ ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হয়।
◼️ 65. মালভূমির দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর: একটি মালভূমির প্রধান দুটি বৈশিষ্ট্য হল: ১) এটি একটি বিস্তৃত উচ্চভূমি, যার উপরিভাগ প্রায় সমতল বা সামান্য তরঙ্গায়িত হয়ে থাকে। ২) এর চারপাশের ভূমি থেকে এর উচ্চতা অনেক বেশি এবং ঢাল বেশ খাড়া হয়ে থাকে।
◼️ 66. স্তূপ পর্বতের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর:স্তূপ পর্বত (Block Mountains) দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হল: ১) দুটি ফাটল বা চ্যুতির মধ্যবর্তী অংশ উপরে উঠে এসে স্তূপ পর্বত গঠিত হয়, এবং ২) এর দুপাশে দুটি গ্রস্ত উপত্যকা (Graben) বা অবনমিত অংশ থাকে।
◼️ 67. সম্পদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর: সম্পদ এমন বস্তু বা উপাদান যা মানুষ উপযোগী মনে করে এবং তা ব্যবহার করে চাহিদা পূরণ করে। সম্পদের মূল্য নির্ভর করে তার প্রাপ্যতা, কার্যকারিতা ও সামাজিক চাহিদার ওপর।
◼️ 68. আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
✅ উত্তর: আবহবিকার হল পাথর বা শিলার ভৌত ও রাসায়নিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া, যাতে শিলা ভেঙে ছোট ছোট খণ্ডে পরিণত হয়। ক্ষয়ীভবন হল সেই ভাঙা পদার্থ পরিবাহকের মাধ্যমে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরে যাওয়ার প্রক্রিয়া।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
📝 1. চা চাষের অনুকূল প্রাকৃতিক অবস্থাগুলির বিবরণ দাও।
✅ উত্তর: চা চাষের জন্য উঁচু-নিচু ঢালু ভূমি, সুনিষ্কাশনযোগ্য মাটি এবং মাঝারি আর্দ্রতা অত্যন্ত উপযোগী। প্রতি বছর ১৫০-২৫০ সেমি বৃষ্টিপাত ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়া চা গাছের বৃদ্ধি ও গুণমান বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। চা গাছ হালকা অ্যাসিডিক ল্যাটেরাইট বা বেলে দোআঁশ মাটিতে ভালো জন্মে। উত্তর-পূর্ব ভারতের অসম, দার্জিলিং ও পশ্চিমবঙ্গের তরাই অঞ্চল চা চাষের জন্য বিখ্যাত।
📝 2. পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর তিনটি গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব আলোচনা করো।
✅ উত্তর: ১.মৌসুমি বায়ু বর্ষাকালে পশ্চিমবঙ্গে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটিয়ে কৃষিকাজের জন্য উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করে।
২.দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর আগমনে খরার হাত থেকে রক্ষা পায় এবং ধানসহ অন্যান্য ফসল ভালো উৎপাদিত হয়।
৩.শীতকালে উত্তর-পশ্চিম শুষ্ক বায়ু চলাচলের ফলে আবহাওয়া শীতল ও শুষ্ক হয়।
মৌসুমি বায়ুর অনিয়মিততা অনেক সময় বন্যা বা খরার সৃষ্টি করেও অর্থনৈতিক ক্ষতি ডেকে আনে।
📝 3. আন্তর্জাতিক তারিখরেখার প্রয়োজনীয়তা কী?
✅ উত্তর: পৃথিবী ২৪টি সময় অঞ্চলে বিভক্ত হওয়ায় আন্তর্জাতিক তারিখরেখা একটি মান নির্ধারণে সহায়তা করে, যাতে দিন ও তারিখ নির্ধারণ করা যায়। পৃথিবী পশ্চিম থেকে পূর্বদিকে ঘোরার ফলে সময়ের পার্থক্য সৃষ্টি হয়, যা আন্তর্জাতিক তারিখরেখার সাহায্যে সমন্বিত হয়।
এই রেখা সময়ের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এবং আন্তর্জাতিক বিমান ও বাণিজ্যে জটিলতা এড়াতে সাহায্য করে।
বিশ্বজুড়ে একক তারিখ ও সময় নির্ধারণে এই রেখার ভূমিকা অপরিসীম।
📝 4. পর্বতবেষ্টিত মালভূমির গঠন ও বৈশিষ্ট্য লেখো।
✅ উত্তর: পর্বতবেষ্টিত মালভূমি একটি উঁচু সমতল ভূমি, যা চারদিক থেকে পর্বত দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে এবং মূলত অভ্যন্তরীণ ভৌমচাপের কারণে গঠিত হয়। এই ধরনের মালভূমি সাধারণত আগ্নেয় বা ক্ষয়প্রাপ্ত শিলায় গঠিত হয়ে থাকে।
এগুলি খনিজসম্পদে সমৃদ্ধ এবং পশুপালন ও খনিশিল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
তিব্বত মালভূমি এবং ডেকান মালভূমি পর্বতবেষ্টিত মালভূমির উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
📝 5. আবহবিকার ও ক্ষয়ীভবনের মধ্যে তিনটি পার্থক্য লেখ।
✅ উত্তর:১.আবহবিকার শিলাকে ভেঙে টুকরো করে, কিন্তু স্থানচ্যুত করে না; ক্ষয়ীভবন সেই টুকরোগুলিকে সঞ্চালন ও স্থানান্তর করে।২.আবহবিকার অভ্যন্তরীণ ও বহিঃস্থ শক্তির প্রভাবে ঘটে, ক্ষয়ীভবন মূলত জল, বায়ু ও হিমবাহের মাধ্যমে সংঘটিত হয়।
৩.শিলায় মরচে পড়া, জমাট বরফে ফাটল ইত্যাদি হলো আবহবিকার।নদী দ্বারা বালি বা কাঁকর বহন ও সঞ্চয় ইত্যাদি হলো ক্ষয়ীভবন।
📝 ➏. মৃত্তিকা সংরক্ষণ কাকে বলে? মৃত্তিকা সংরক্ষণের উপায় গুলি লেখ।
✅ উত্তর:
মৃত্তিকা সংরক্ষণ হল মৃত্তিকার গঠন ও উর্বরতা রক্ষার প্রক্রিয়া যাতে ভূমিক্ষয় কমানো যায়।
এই প্রক্রিয়া কৃষিকাজ, বন রোপণ ও জল সংরক্ষণের মাধ্যমে মৃত্তিকার ভারসাম্য বজায় রাখে।
ভূমি ঢাল অনুযায়ী চাষ, শেল্টার বেল্ট ও ঘাস রোপণ কার্যকর পদ্ধতি।
বাঁধ নির্মাণ, সেচব্যবস্থার উন্নতি এবং বনসৃজনও মৃত্তিকা সংরক্ষণের উপায়।
📝 ➐. আবহবিকার এর ফলাফল গুলি লেখ।
✅ উত্তর:
আবহবিকার শিলার ভাঙ্গন ঘটিয়ে মৃত্তিকা তৈরিতে সহায়তা করে।
এতে ভূমিরূপ পরিবর্তিত হয় এবং নতুন ভূমিরূপ যেমন গিরিখাত, গুহা, স্তূপ তৈরি হয়।
পর্বত ও মালভূমির উচ্চতা হ্রাস পায়, ভূমি সমতল হয়।
বিভিন্ন খনিজ ও পুষ্টি উপাদান মুক্ত হয়, যা কৃষিকাজে সহায়ক।
📝 ➑. কলকাতা বন্দর গড়ে ওঠার পাঁচটি কারণ লেখা।
✅ উত্তর:
১. হুগলি নদীর তীরে অবস্থান করায় জলপথ পরিবহন সহজ হয়েছে।
২. পেছনের গাঙ্গেয় সমভূমি থেকে কৃষিপণ্য সহজে সংগ্রহযোগ্য।
৩. ব্রিটিশদের প্রশাসনিক ও বাণিজ্যিক পরিকল্পনার ফলেই এটি বিকশিত হয়।
৪. উন্নত রেল ও সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা বাণিজ্য বিস্তারে সাহায্য করে।
৫. সমুদ্রগামী জাহাজের জন্য নিরাপদ নোঙরস্থল হিসেবেও এর গুরুত্ব ছিল।
📝 ➒. অঙ্গার যোজন প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা কর।
✅ উত্তর:
এটি একটি বিপাক প্রক্রিয়া যেখানে অক্সিজেন ছাড়াই কোষে শক্তি উৎপন্ন হয়।
শর্করা ভেঙে এলকোহল, অ্যাসিড বা গ্যাস জাতীয় পদার্থ উৎপন্ন হয়।
এই প্রক্রিয়া সাধারণত ইস্ট, ব্যাকটেরিয়া প্রভৃতি জীবের মধ্যে ঘটে।
কোষের সাইটোপ্লাজমে এটি সংঘটিত হয় এবং এতে তুলনামূলকভাবে কম শক্তি উৎপন্ন হয়।
📝 ➓. দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের তিনটি পার্থক্য লেখ।
✅ উত্তর:
বিষয় | দুর্যোগ | বিপর্যয় |
---|---|---|
অর্থ | প্রাকৃতিক বা মানবসৃষ্ট ক্ষতিকর ঘটনা | দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি ও ধ্বংস |
সময় | হঠাৎ এবং স্বল্পস্থায়ী | দীর্ঘস্থায়ী ও প্রভাব বিস্তারকারী |
প্রতিক্রিয়া | সতর্কতা ও প্রস্তুতিতে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব | পুনর্গঠন ও ত্রাণ কার্যক্রম প্রয়োজন হয় |
📝 ⓫. আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা সম্পর্কে একটি টীকা লেখ।
✅ উত্তর:
আন্তর্জাতিক তারিখ রেখা একটি কাল্পনিক রেখা যা ১৮০° দ্রাঘিমাংশ বরাবর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল অতিক্রম করে।
এই রেখা পার হলে তারিখ একদিন বাড়ে বা কমে যায়।
পশ্চিম দিকে গেলে তারিখ একদিন বাড়ে, পূর্ব দিকে গেলে একদিন কমে।
সময় ও তারিখের বৈশ্বিক সামঞ্জস্য বজায় রাখতে রেখাটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
📝 ⓬. পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য ও উপকূলীয় জলবায়ুর পার্থক্য লেখ।
✅ উত্তর:
বৈশিষ্ট্য | পার্বত্য জলবায়ু | উপকূলীয় জলবায়ু |
---|---|---|
তাপমাত্রা | ঠান্ডা ও শীতল | গরম ও আর্দ্র |
বৃষ্টিপাত | অধিক বৃষ্টিপাত | বর্ষায় মাঝারি থেকে বেশি বৃষ্টিপাত |
বাতাসের ধরণ | শুষ্ক ও ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হয় | আর্দ্র ও কাঁচা বাতাস প্রবাহিত হয় |
অঞ্চল | দার্জিলিং, কালিম্পং | দীঘা, হালদিয়া, কাঁথি |
✅ উত্তর:
নদীর তলদেশে অতিরিক্ত পলি জমায় নাব্যতা হ্রাস পেয়েছে।
বড় জাহাজ চলাচলে বাধা সৃষ্টি হয়, ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রভাব পড়ে।
ডক ও জেটির পরিকাঠামো অপ্রতুল এবং আধুনিকীকরণের অভাব রয়েছে।
জলদূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যাও পরিবেশগত ক্ষতির কারণ।
📝 14. সুন্দরবন অঞ্চলের নদীগুলির বৈশিষ্ট্য লেখ।
✅ উত্তর:
এই অঞ্চলের নদীগুলি জোয়ারভাটার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এবং সর্পিল প্রকৃতির।
নদীর গতিপ্রকৃতি ধীর এবং পলি জমে মোহনা বিস্তৃত হয়।
নদীগুলি বহু শাখায় বিভক্ত, এবং বন্যার সময় প্রবাহ পথ পরিবর্তিত হয়।
জোয়ারের সময় নদীর জল লবণাক্ত হয়ে পড়ে, যা কৃষিতে প্রভাব ফেলে।
📝 15. পশ্চিমবঙ্গের চা শিল্পের চারটি সমস্যা আলোচনা কর।
✅ উত্তর:
১. পুরনো গাছের সংখ্যা বেশি হওয়ায় উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।
২. শ্রমিকদের নিম্ন মজুরি ও দুর্বল জীবনযাত্রা উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৩. আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব চা প্রক্রিয়াকরণকে ধীর করে তোলে।
৪. আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা এবং মানের ঘাটতি রপ্তানির সমস্যা তৈরি করে।
📝 16. প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেঘলা সম্পর্কে টীকা লেখ।
✅ উত্তর:
প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেঘলা একটি ভূতাত্ত্বিক অঞ্চল যা “রিং অব ফায়ার” নামে পরিচিত।
এটি প্রশান্ত মহাসাগরের চারপাশ ঘিরে থাকা আগ্নেয়গিরি ও ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকাগুলির সমষ্টি।
এই অঞ্চলে প্লেট টেকটনিক সংঘর্ষের ফলে ঘনঘন ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির উদ্গিরণ ঘটে।
এটি বিশ্বের অন্যতম বিপজ্জনক আগ্নেয় এলাকা হিসেবে পরিচিত।
✍️রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৫):
📝 1. চা চাষের অনুকূল ভৌগলিক পরিবেশ আলোচনা কর।
✅ উত্তর:
-
উষ্ণতা: চা গাছের জন্য ১৫°–৩০°C তাপমাত্রা উপযোগী। অতিরিক্ত ঠান্ডা বা গরম চা পাতার গুণমান নষ্ট করে।
-
আর্দ্রতা: সারা বছর হালকা কুয়াশা ও উচ্চ আর্দ্রতা (৭০%–৯০%) চা পাতার গঠন উন্নত করে।
-
বৃষ্টিপাত: বার্ষিক ১৫০–৩০০ সেমি পরিমিত বৃষ্টিপাত প্রয়োজন, বিশেষ করে বর্ষাকালে নিয়মিত বৃষ্টিপাত দরকার।
-
মাটি: অম্লধর্মী (pH ৪.৫–৫.৫) দোআঁশ বা বেলে-দোআঁশ মাটি, যা জল দ্রুত নিষ্কাশন করতে পারে, চা চাষের জন্য উপযুক্ত।
-
জমি: ঢালু পাহাড়ি জমি অতিরিক্ত জল জমতে না দিয়ে গাছের শিকড়ে বাতাস পৌঁছাতে সাহায্য করে।
-
শ্রমিক: চা গাছ থেকে কুঁড়ি তুলতে অভিজ্ঞ শ্রমিকের দরকার, তাই সস্তা ও সহজলভ্য শ্রমশক্তি প্রয়োজন।
-
অবকাঠামো: চা প্রক্রিয়াকরণ ও পরিবহণের জন্য কারখানা, সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
📝 2. ধান চাষের অনুকূল ভৌগলিক পরিবেশ আলোচনা কর।
✅ উত্তর:
-
উষ্ণতা: ধান চাষের জন্য ২০°–৩০°C তাপমাত্রা প্রয়োজন, বিশেষ করে বপনের সময় উচ্চ তাপমাত্রা অঙ্কুরোদ্গমে সহায়ক।
-
আর্দ্রতা: গড়ে ৭০%–৮০% আর্দ্রতা ধান গাছের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয়।
-
বৃষ্টিপাত: বার্ষিক ১০০–২০০ সেমি বৃষ্টিপাত যথাযথ, বিশেষ করে রোপণ ও ধান গঠনের সময় পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত দরকার।
-
মাটি: জলধারণক্ষম কাদামাটি বা দোআঁশ মাটি ধান চাষের জন্য উপযুক্ত, কারণ এতে দীর্ঘ সময় জল ধরে রাখা যায়।
-
জমি: সমতল, নিচু ও সেচযোগ্য জমি ধান চাষে সহায়ক। প্লাবনভূমি বা নদীতীরবর্তী অঞ্চল সবচেয়ে অনুকূল।
-
শ্রমিক: রোপণ, আগাছা নিয়ন্ত্রণ ও ধান কাটা—এসব কাজে প্রচুর পরিশ্রমী ও দক্ষ শ্রমিক প্রয়োজন।
-
সেচ ব্যবস্থা: বর্ষার বাইরে ধান চাষ করতে হলে নির্ভরযোগ্য সেচ ব্যবস্থার প্রয়োজন।
📝 3. পশ্চিমবঙ্গের জলবায়ুতে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব আলোচনা কর।
✅ উত্তর:
-
বৃষ্টিপাত: দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বর্ষাকালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়, যা কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
-
উষ্ণতা ও শীতলতা: এই বায়ুর কারণে গ্রীষ্মে তাপমাত্রা কমে যায় এবং শীতকালে শুষ্ক, ঠান্ডা বায়ু বইতে থাকে।
-
খরা ও বন্যা: কখনও মৌসুমি বায়ুর অনিয়মিততা খরা বা অতিবৃষ্টির ফলে বন্যা সৃষ্টি করে।
-
কৃষিতে প্রভাব: ধান, পাট প্রভৃতি মৌসুমি ফসল চাষ এই বায়ুর উপর নির্ভরশীল।
-
জীবনযাত্রায় প্রভাব: অতিবৃষ্টির ফলে জনজীবনে বিঘ্ন ঘটে এবং যোগাযোগ ব্যবস্থাও ব্যাহত হয়।
📝 4. পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্পের উন্নতির কারণগুলি আলোচনা কর।
✅ উত্তর:
-
প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য: পশ্চিমবঙ্গে পাহাড় (দার্জিলিং), সমুদ্র (দিঘা, মন্দারমণি), বনাঞ্চল (সুন্দরবন), নদী ও সমতলের বৈচিত্র্য পর্যটকদের আকর্ষণ করে।
-
ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান: কলকাতা, মুর্শিদাবাদ, বিষ্ণুপুর, শান্তিনিকেতন ইত্যাদি অঞ্চলে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থানগুলি পর্যটন উন্নয়নে সহায়ক।
-
যোগাযোগ ও পরিবহন: রেল, সড়ক, বিমান ও জলপথের সহজলভ্য যোগাযোগ ব্যবস্থার ফলে পর্যটকদের যাতায়াত সহজ হয়েছে।
-
সরকারি উদ্যোগ: পর্যটন পরিকাঠামো (হোটেল, গাইড, তথ্য কেন্দ্র) উন্নত করার জন্য সরকারি পরিকল্পনা ও প্রোমোশন কাজ করছে।
-
উৎসব ও সংস্কৃতি: দুর্গাপুজো, পৌষমেলা, হোলি, নৃত্য-সঙ্গীত ও হস্তশিল্প পর্যটকদের সংস্কৃতি আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।
এই সব কারণে পশ্চিমবঙ্গে পর্যটন শিল্প ধীরে ধীরে বিকশিত হচ্ছে ও অর্থনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
📝 5. পশ্চিমবঙ্গের উত্তরের পার্বত্য অঞ্চলের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যগুলি বর্ণনা কর।
✅ উত্তর:
-
উঁচু পার্বত্য ভূমি: দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং প্রভৃতি অঞ্চল হিমালয়ের অংশ, যেখানে উচ্চতা ২০০০ থেকে ৩৬৫৮ মিটার পর্যন্ত পৌঁছে।
-
শীতল ও আর্দ্র জলবায়ু: এখানে সারা বছর ঠান্ডা জলবায়ু থাকে, গ্রীষ্মে আরামদায়ক ও শীতে অত্যন্ত ঠান্ডা হয়।
-
ঘন অরণ্য: পাহাড়ি অঞ্চলে পাইন, দেবদারু, বুর্ক, বাঁশ প্রভৃতি গাছসহ চিরহরিৎ বনভূমি বিস্তৃত।
-
প্রবাহমান নদী ও ঝরনা: তিস্তা, রঙ্গীত, ঝালং, জলঢাকা ইত্যাদি নদী ও জলপ্রপাত পার্বত্য অঞ্চলকে জীবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলে।
-
জৈব বৈচিত্র্য: নানা প্রজাতির পশুপাখি ও উদ্ভিদ, যেমন লাল পান্ডা, হিমালয়ান মনাল প্রভৃতি এখানে দেখা যায়, যা প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের নিদর্শন।
এই বৈশিষ্ট্যগুলি দার্জিলিং হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলকে পর্যটন ও পরিবেশগত গুরুত্বে অনন্য করে তোলে।
📝 6. মানুষের জীবনে সমভূমির প্রভাবগুলি আলোচনা করো।
✅ উত্তর:
-
কৃষিকাজে উপযোগী: সমভূমির উর্বর মাটি, নদী দ্বারা সেচের সুবিধা এবং সমতল ভূমি কৃষিকাজের জন্য অত্যন্ত উপযোগী।
-
যোগাযোগ ও বসতির সুবিধা: সমতল ভূমি সড়ক, রেলপথ ও নগর গড়ে তোলার জন্য উপযুক্ত, ফলে ঘন বসতি গড়ে ওঠে।
-
শিল্প স্থাপনে সহায়ক: সমভূমির প্রশস্ত এলাকা শিল্প কারখানা, গুদাম ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
-
অর্থনৈতিক উন্নয়ন: কৃষি, ব্যবসা ও পরিবহণের বিকাশের মাধ্যমে সমভূমি অঞ্চলে অর্থনৈতিক কার্যকলাপ বেশি হয়।
-
প্রাকৃতিক দুর্যোগের আশঙ্কা: যদিও সমভূমি অনেকভাবে উপকারী, তবে এখানে বন্যা ও নদীভাঙনের ঝুঁকি থাকে।
এইভাবে সমভূমি মানুষের জীবনে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে গভীর প্রভাব ফেলে।
📝 8. যান্ত্রিক আবহবিকারের বিভিন্ন প্রক্রিয়া: শল্কমোচন, ক্ষুদ্রকণা বিসরণ, প্রস্তরচাই বিচ্ছিন্নকরণ ইত্যাদি ব্যাখ্যা কর।
✅ উত্তর:
-
শল্কমোচন (Exfoliation): গরম ও ঠান্ডা আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে পাথরের উপরের স্তরগুলো প্রসারিত ও সংকুচিত হয়ে ধীরে ধীরে খসে পড়ে। এতে পেঁয়াজের খোসার মতো স্তরে স্তরে পাথর ভেঙে যায়।
-
ক্ষুদ্রকণা বিসরণ (Granular Disintegration): বিভিন্ন খনিজের বিভিন্ন তাপ প্রসারণের ফলে পাথরের খনিজ কণাগুলি আলাদা হয়ে যায় এবং ছোট ছোট কণায় পরিণত হয়।
-
প্রস্তরচাই বিচ্ছিন্নকরণ (Block Disintegration): তীব্র তাপমাত্রা পার্থক্যের ফলে বড় পাথর ফেটে গিয়ে বড় বড় চৌকো আকারে ভেঙে যায়। এটি শুষ্ক ও গরম অঞ্চলে বেশি ঘটে।
-
বিষম তাপীয় প্রসারণ: দিন-রাতের তাপমাত্রার তারতম্যে পাথরের বাইরের ও ভিতরের অংশের ভিন্ন হারে প্রসারণ হয়, ফলে ফাটল সৃষ্টি হয়।
-
তুষার ও বরফের প্রভাব: শীতল অঞ্চলে পাথরের ফাঁকে জল জমে বরফে পরিণত হলে চাপ সৃষ্টি হয় ও পাথর ভেঙে যায়।
এইসব প্রক্রিয়ার ফলে কঠিন শিলার গঠন ভেঙে গিয়ে আবহবিকার ও মৃত্তিকা গঠনের পথ সুগম হয়।