✍️বিকল্প ভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-১):
১. পাশাপাশি অবস্থিত দুটি ব্যঞ্জনধ্বনি বা বর্ণ পরস্পর স্থান পরিবর্তন করলে তাকে বলে –
(ক) ধ্বনিসাম্য, (খ) ব্যঞ্জনসাম্য, (গ) ধ্বনি বিপর্যয়, (ঘ) শ্রুতি বিপর্যয়।
উত্তর: (গ) ধ্বনি বিপর্যয়।
২. অপিনিহিতির উদাহরণ হল –
(ক) সাধু > সাউধ, (খ) বিলাতি > বিলিতি, (গ) উপাস > উপোস, (ঘ) শ্লোক > শোলক।
উত্তর: (ক) সাধু > সাউধ।
৩. বিপ্রকর্ষের অপর নাম –
(ক) স্বরাগম, (খ) স্বরভক্তি, (গ) ব্যঞ্জনাগম, (ঘ) স্বরলোপ।
উত্তর: (খ)স্বরভক্তি ।
৪. মৌলিক স্বরধ্বনি কয়টি?
(ক) ৭টি, (খ) ৮টি, (গ) ১১টি, (ঘ) ১২টি।
উত্তর: (ক) ৭টি।
৫. উচ্চ স্বরধ্বনি হল –
(ক) এ, ও, (খ) অ, অ্যা, (গ) ই, উ, (ঘ) অ, এ।
উত্তর: (গ) ই, উ।
৬. বেঞ্চ > বেঞ্চি –
(ক) স্বরাগম, (খ) স্বরভক্তি, (গ) স্বরলোপ, (ঘ) স্বরসংগতি।
উত্তর: (খ) স্বরভক্তি।
৭. ‘অপিনিহিতি' শব্দটির অর্থ –
(ক) বিপ্রকর্ষ, (খ) পূর্বে স্থাপন, (গ) সাম্য লাভ, (ঘ) স্বরের আগম।
উত্তর: (খ) পূর্বে স্থাপন।
৮. তাড়িত ধ্বনি বলা হয় –
(ক) ড়, ঢ়, (খ) য, ল, (গ) ম, ব, (ঘ) ক, ল।
উত্তর: (ক) ড়, ঢ়।
৯. অনুসর্গের অপর নাম –
(ক) কর্মপ্রবচনীয়, (খ) প্রত্যয়, (গ) উপসর্গ, (ঘ) কোনোটি নয়।
উত্তর: (ক) কর্মপ্রবচনীয়।
১০. অল্পপ্রাণ ধ্বনি মহাপ্রাণ ধ্বনির মতো উচ্চারিত হলে তাকে বলে –
(ক) পীনায়ন, (খ) ক্ষীণায়ন, (গ) ঘোষীভবন, (ঘ) অঘোষীভবন।
উত্তর: (খ) ক্ষীণায়ন।
১১. যে স্বরধ্বনি উচ্চারণে জিভ সবচেয়ে নীচে থাকে সেগুলি –
(ক) নিম্ন স্বরধ্বনি, (খ) নিম্নমধ্য স্বরধ্বনি, (গ) কেন্দ্রীয় স্বরধ্বনি, (ঘ) বিবৃত স্বরধ্বনি।
উত্তর: (ক) নিম্ন স্বরধ্বনি।
১২. পার্শ্বিক ধ্বনির একটি উদাহরণ হল –
(ক) হ্, (খ) ল্, (গ) স্।
উত্তর: (খ) ল্।
১৩. 'মিষ্টান্ন' শব্দের প্রকৃত সন্ধিবিচ্ছেদ হল –
(ক) মিন্ট + অন্ন, (খ) মিষ্টি + অন্ন, (গ) মিষ্ঠা + অন্ন।
উত্তর: (খ) মিষ্টি + অন্ন।
১৪. স্পর্ধা > আস্পর্ধা – এটি –
(ক) আদি স্বরাগম, (খ) মধ্য স্বরাগম, (গ) অন্ত্যস্বরাগম।
উত্তর: (ক) আদি স্বরাগম।
১৫. অপিনিহিতি হল একপ্রকার –
(ক) ধ্বনিলোপ, (খ) ধ্বনির আগম, (গ) ধ্বনির রূপান্তর, (ঘ) ধ্বনির বিপর্যাস।
উত্তর: (খ) ধ্বনির আগম।
১৬. পটললতা > পলতা – এটি কী ধরনের ধ্বনি পরিবর্তন?
(ক) অন্তবাঞ্জন লোগ, (খ) অস্তস্বর লোপ, (গ) সমাক্ষর লোপ, (ঘ) কোনোটিই নয়।
উত্তর: (খ) অস্তস্বর লোপ।
১৭. অর্ধবিবৃত স্বরধ্বনির উদাহরণ হল –
(ক) অ, (খ) ই, এ, (গ) আ, উ, (ঘ) ও।
উত্তর: (ক) অ।
১৮. স্ব + র = স্বৈর কোন্ ধরনের সন্ধি?
(ক) স্বরসন্ধি, (খ) নিপাতনে সিদ্ধ, (গ) ব্যঞ্জনসন্দি, (ঘ) খাঁটি বাংলা সন্ধি।
উত্তর: (ক) স্বরসন্ধি।
১৯. কারকের অর্থ প্রকাশ করে –
(ক) অনুসর্গ ও উপসর্গ, (খ) অনুসর্গ ও বিভক্তি, (গ) প্রত্যয় ও বিভক্তি, (ঘ) উপসর্গ ও বিভক্তি
উত্তর: (খ) অনুসর্গ ও বিভক্তি।
২০. ‘এ’ এবং ‘ও’ স্বরধ্বনিদ্বয়কে বলে –
(ক) উচ্চ স্বরধ্বনি, (খ) নিম্ন স্বরধ্বনি, (গ) নিম্নমধ্য স্বরধ্বনি, (ঘ) উচ্চমধ্য স্বরধ্বনি।
উত্তর: (ঘ) উচ্চমধ্য স্বরধ্বনি।
২১. উপসর্গ ধাতু বা পদের পূর্বে বসে ধাতু বা পদটির –
(ক) অর্থ পরিবর্তন ঘটায়, (খ) বাক্য গঠন করে, (গ) ধ্বনি বিপর্যয় ঘটায়, (ঘ) সন্ধিযুক্ত করে।
উত্তর: (ক) অর্থ পরিবর্তন ঘটায়।
২২. মৌলিক স্বরধ্বনিগুলো কয়টি লেখো –
(ক) সাতটি, (খ) পাঁচটি, (গ) চারটি, (ঘ) তিনটি।
উত্তর: (ক) সাতটি।
২৩. বর্ণ বিপর্যয়ে কোন্ বর্ণের বিপর্যয়? –
(ক) স্বরবর্ণের, (খ) ব্যঞ্জনবর্ণের, (গ) স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণের, (ঘ) ব্যঞ্জন ও স্বরবর্ণের।
উত্তর: (গ) স্বর ও ব্যঞ্জনবর্ণের।
২৪. অনুসর্গগুলো আসলে –
(ক) উপসর্গ, (খ) অব্যয়, (গ) ক্রিয়াপদ, (ঘ) বিশেষ্য।
উত্তর: (খ) অব্যয়।
২৫. মিশ্রধ্বনি কোটি? –
(ক) ঋ, (খ) ৯, (গ) ও, (ঘ) ঔ।
উত্তর: (ঘ) ঔ।
২৬. অপিনিহিতির উদাহরণ হল –
(ক) সাধু > সাউধ, (খ) বিলাতি > বিলিতি, (গ) উপাস > উপোস, (ঘ) শ্লোক > শোলোক।
উত্তর: (ক) সাধু> সাউধ।
২৭. ‘ল’ কোন্ ধরনের ধ্বনি? –
(ক) কম্পিত ধ্বনি, (খ) তাড়িত ধ্বনি, (গ) পার্শ্বিক ধ্বনি, (ঘ) উষ্ম ধ্বনি।
উত্তর: (গ) পার্শ্বিক ধ্বনি।
২৮. ‘ধর্ম > ধৰ্ম্ম' – কী ধরনের ধ্বনি পরিবর্তনের ফলে এসেছে?
(ক) স্বরভক্তি, (খ) সমীভবন, (গ) অপিনিহিতি, (ঘ) স্বরসংগতি।
উত্তর: (খ)সমীভবন।
২৯. ওমলেট > মামলেট কী ধরনের পরিবর্তন?
(ক) স্বরাগম, (খ) ব্যঞ্জনাগম, (গ) সমীভবন, (ঘ) ব্যঞ্জনলোপ।
উত্তর: (খ) ব্যঞ্জনাগম।
৩০. 'ম' ধ্বনিটি হল –
(ক) স্পর্শধ্বনি, (খ) নাসিক্যধ্বনি, (গ) ব্যঞ্জনধ্বনি, (ঘ) রণিত ধ্বনি।
উত্তর: (ক) স্পর্শধ্বনি।
৩১. বাংলা ভাষায় মৌলিক স্বরধ্বনির সংখ্যা –
(ক) ৬, (খ) ৭, (গ) ৮, (ঘ) ৯।
উত্তর: (খ) ৭।
৩২. অঘোষ মহাপ্রাণ ব্যঞ্জন হল –
(ক) ক, থ, (খ) গ, ছ, (গ) খ, ফ, (ঘ) দ, ধ।
উত্তর: (গ) খ, ফ।
৩৩. নব + ঊঢ়া = নবোঢ়া-এখানে সন্ধির যে নিয়মটি প্রযোজ্য -
(ক) অ + ঊ = ও, (খ) অ + উ = ও, (গ) ব + উ = ও, (ঘ) ব + উ = ও।
উত্তর: (ক) অ + ঊ = ও।
৩৪. বিশ্রি > বিচ্ছরি-ধ্বনিতাত্ত্বিক নিয়মটি হল –
(ক) প্রগত সমীভবন, (খ) পরাগত সমীভবন, (গ) অন্যোন্য সমীভবন, (ঘ) ব্যঞ্জনলোপ।
উত্তর: (খ) পরাগত সমীভবন।
✍️অতি সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-১):
১. 'ই' 'ঔ' ছাড়া অন্য দুটি যৌগিক স্বরের উদাহরণ দাও।
উত্তর: 'ঐ', 'ও'।
২. 'বিপ্রকর্ষ' কাকে বলে?
উত্তর: উচ্চারণের সুবিধার জন্য যখন দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝে একটি স্বরধ্বনির আগমন ঘটে তখন তাকে মধ্যস্বরাগম বা স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ বলে। যেমন-রত্ন>রতন, স্বপ্ন>সপন।
৩. মধ্য স্বরলোপের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: শব্দের মাঝখানের স্বরধ্বনির লোপ পেলে তাকে মধ্য স্বরলোপ বলে। উদাহরণস্বরূপ, 'গামোছা' থেকে 'গামছা' এবং 'বসতি' থেকে 'বস্তি' শব্দ দুটি মধ্য স্বরলোপের উদাহরণ।
৪. 'দহ' >দ– ধ্বনিতত্ত্বের কোন্ নিয়মে পরিবর্তিত হয়েছে লেখো।
উত্তর: 'দহ' শব্দে 'হ' ধ্বনিটি আগে উচ্চারিত হওয়ার ফলে 'হ' ধ্বনির স্থান পরিবর্তন বা বিপর্যয় ঘটেছে, যার ফলে 'দহ' থেকে 'দ' তে রূপান্তর ঘটেছে।
৫. 'শীতার্ত' – সন্ধিবিচ্ছেদ করো।
উত্তর: 'শীত' + 'অর্ত' = 'শীতার্ত'। এখানে স্বরসন্ধি ঘটেছে।
৬. ‘অনুনাসিক স্বর' কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণকালে বায়ু নাসারন্ধ্র দিয়ে নির্গত হয়, তাকে অনুনাসিক স্বর বলে। উদাহরণ: অঁ, আঁ, ইঁ।
৭. ‘বিপ্রকর্ষ' কথার অর্থ কী ?
উত্তর: উচ্চারণের সুবিধার জন্য যখন দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝে একটি স্বরধ্বনির আগমন
ঘটে তখন তাকে মধ্যস্বরাগম বা স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ বলে।
যেমন-রত্ন>রতন, স্বপ্ন>সপন।
৮. ‘সন্ধিস্বর' বলতে কী বোঝো?
উত্তর: দুটি শব্দ বা ধ্বনি মিলনের ফলে যে নতুন স্বরধ্বনি উৎপন্ন হয়, তাকে সন্ধিস্বর বলে।যেমন: ঐ (ওই্), ঔ(ওউ্)।
৯. ‘দ্যুলোক' শব্দটির সন্ধিবিচ্ছেদ করো।
উত্তর: ‘দিব’ + ‘লোক’ = ‘দ্যুলোক’।
১০. স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনির দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
১. স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় বায়ু নিঃসরণে কোনো বাধার সৃষ্টি হয় না। ব্যঞ্জনধ্বনির ক্ষেত্রে বায়ু নিঃসরণে বাধার সৃষ্টি হয়।
২. স্বরধ্বনি একা উচ্চারিত হতে পারে। ব্যঞ্জনধ্বনি একা উচ্চারিত হতে পারে না, স্বরের সাহায্য নিয়ে উচ্চারিত হয়।
১১. ‘বিপর্যয়' কী?
উত্তর: দুটি পাশাপাশি অবস্থিত বর্ণ বা ধ্বনির স্থান পরিবর্তনকে বিপর্যয় বলে। যেমন:
- নকশা > নশকা, রিকশা > রিস্কা।
১২. ‘যৌগিক স্বরধ্বনি' কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যে স্বরধ্বনি দুটি ভিন্ন স্বরধ্বনির মিলনে তৈরি হয় এবং একসঙ্গে উচ্চারিত হয় তাকে যৌগিক স্বরধ্বনি বলে।
উদাহরণ: 'ঐ', 'ঔ'।
১৩. ‘নাসিক্যীভবন' বলতে কী বোঝো?
উত্তর: যখন কোনো শব্দে নাসিক্য ব্যঞ্জন(না,মা,ঙ,ঞ) লোপ পায় এবং তার পরিবর্তে পূর্ববর্তী স্বরধ্বনিটি নাসিক্য বা অনুনাসিক হয়ে যায়, তখন তাকে নাসিক্যীভবন বলে।
উত্তর:
👉 বিপজ্জনক = বিপদ্ + জনক।
👉 স্বেচ্ছা = স্ব + ইচ্ছা।
১৫. যৌগিক স্বরধ্বনিগুলো লেখো।
উত্তর: যৌগিক স্বরধ্বনিগুলো হল – ই, ঐ, ঔ।
১৬. ‘নামধাতুর’ উদাহরণ দাও।
উত্তর: বিশেষ্য, বিশেষণ বা অব্যয় পদ যখন ক্রিয়াপদের মতো ব্যবহার করা হয়, তখন তাকে নামধাতু বলে। উদাহরণস্বরূপ, "জুতা" থেকে "জুতানো", "বেত" থেকে "বেতানো", "হাত" থেকে "হাতানো", এবং "বাঁকা" থেকে "বাঁকানো" ইত্যাদি।
১৭. ‘অপিনিহিতি' কাকে বলে উদাহরণসহ লেখো।
উত্তর: শব্দের মধ্যে ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে যুক্ত 'ই' বা 'উ' যেখানে উচ্চারিত হওয়ার কথা, তার আগে উচ্চারিত হলে তাকে অপিনিহিতি বলে। উদাহরণস্বরূপ, "রাখিয়া" > "রাইখ্যা", "আজি" > "আইজ"।
১৮. ‘অঘোষ ধ্বনি' কাকে বলে?
উত্তর: যেসব ধ্বনির উচ্চারণের সময় স্বরযন্ত্র কাঁপে না, তাদের অঘোষ ধ্বনি বলে।
উদাহরণ: ক, খ, প, ফ ইত্যাদি।
১৯. ‘বিলিতি’ শব্দটি কী ধরনের ধ্বনি পরিবর্তনে সৃষ্ট?
উত্তর:আদ্যস্বর ও অন্ত্যস্বর অনুযায়ী মধ্যস্বর পরিবর্তিত হলে, মধ্যগত স্বরসঙ্গতি হয়। যেমন - বিলাতি > বিলিতি ।
২০. নাম অনুসর্গ কাকে বলে?
উত্তর: যে অনুসর্গ বিশেষ্য বা সর্বনাম পদের সাথে যুক্ত হয়ে বাক্যে অর্থ প্রকাশ করে, তাকে নাম অনুসর্গ বলে।
উদাহরণ: জন্য, কাছে, পরে ইত্যাদি।
২১. কৃৎ প্রত্যয় ও ধাত্ববয়ব প্রত্যয়ের মধ্যে একটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
👉 কৃৎ প্রত্যয়: ধাতুর সাথে যুক্ত হয়ে নতুন শব্দ তৈরি করে। উদাহরণ: লেখা > লেখক।
👉 ধাত্ববয়ব প্রত্যয়: ক্রিয়াপদের রূপ গঠনে সাহায্য করে। উদাহরণ: কর্ + ণ > করণ।
২২. ‘র’ ও ‘ল’ এই দুটি কী ধরনের ব্যঞ্জন?
উত্তর: 'র' ও 'ল' হল কম্পিত ব্যঞ্জনধ্বনি।
২৩. ‘সন্ধ্যক্ষর' কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: দুটি ধ্বনি মিলে যে নতুন ধ্বনি তৈরি হয়, তাকে সন্ধ্যক্ষর বলে।
উদাহরণ: আ + ই = ঐ, আ + উ = ঔ।
২৪. ‘মাউহা’ ও ‘হরষ’ শব্দটি ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ নিয়ম মেনেছে লেখো।
উত্তর: 'মাউহা' শব্দটি ধ্বনি রূপান্তরের ফলে 'মৌহা' হয়েছে। আর 'হরষ' শব্দটি স্বরলোপের নিয়মে পরিবর্তিত হয়েছে।
২৫. ‘ধ্বনি বিপর্যয়' কী? উদাহরণ দিয়ে বুঝিয়ে দাও।
উত্তর: দুটি পাশাপাশি অবস্থিত ধ্বনি পরস্পর স্থান পরিবর্তন করলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।উদাহরণস্বরূপ, "নকশা" থেকে "নশকা", "রিকশা" থেকে "রিশকা" ইত্যাদি।
২৬. সন্ধিবিচ্ছেদ করো:
(ক) নায়ক = নি + অক।
(খ) আশ্চর্য = আ + চর্য।
(গ) অন্বেষণ = অনু + এষণ।
(ঘ) নীরোগ = নি + রোগ।
২৭. উদাহরণসহ সংজ্ঞা দাও:
(ক) স্বরভক্তি:উচ্চারণের সুবিধার জন্য যখন দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝে একটি স্বরধ্বনির আগমন
ঘটে তখন তাকে মধ্যস্বরাগম বা স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ বলে।
যেমন-রত্ন>রতন, স্বপ্ন>সপন।
(খ) সমীভবন: যখন দুটি ব্যঞ্জনধ্বনি পাশাপাশি অবস্থান করে, তখন একটি ধ্বনি অন্যটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তার বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করে বা পরিবর্তিত হয়, তখন তাকে সমীভবন বলে। যেমন-পদ্ম>পদ্দ, কর্ম>কম্ম ইত্যাদি ।
(গ) অপিনিহিতি: শব্দের মধ্যে ব্যঞ্জনধ্বনির সঙ্গে যুক্ত 'ই' বা 'উ' যেখানে উচ্চারিত হওয়ার কথা, তার আগে উচ্চারিত হলে তাকে অপিনিহিতি বলে। উদাহরণস্বরূপ, "রাখিয়া" > "রাইখ্যা", "আজি" > "আইজ"।
(ঘ) বর্ণবিপর্যয়: দুটি পাশাপাশি অবস্থিত ধ্বনি পরস্পর স্থান পরিবর্তন করলে তাকে ধ্বনি বিপর্যয় বলে।উদাহরণস্বরূপ, "নকশা" থেকে "নশকা", "রিকশা" থেকে "রিশকা" ইত্যাদি।
২৮. ‘স্বরভক্তি’ কথাটির অর্থ কী?
উত্তর: 'স্বরভক্তি' কথার অর্থ হলো স্বরের সহযোগে বিভাজন, বা অন্যভাবে বলতে গেলে, উচ্চারণের সুবিধার জন্য সংযুক্ত ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝখানে স্বরধ্বনি প্রবেশ করানো।
২৯. ‘বিষমীভবন’ হয়েছে এমন একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর:
- যখন দুটি ধ্বনি পাশাপাশি অবস্থান করে এবং তাদের মধ্যে একটি ধ্বনি অন্যটির প্রভাবে ভিন্ন হয়ে যায়, তখন তাকে বিষমীভবন বলে।
- চন্দ্র > চাঁদ
- দন্ত > দাঁত
- কণ্টক > কাঁটা।
৩০. হ্রদ > দহ – কী ধরনের পরিবর্তনের উদাহরণ?
উত্তর: হ্রদ > দহ পরিবর্তনটি অপিনিহিতি নামক ধ্বনি পরিবর্তনের উদাহরণ। এখানে 'হ্রদ' শব্দের প্রথম অংশ 'হ্র' অপসৃত হয়ে 'দহ' রূপে এসেছে।
৩১. ‘ঘোষীভবন’ কাকে বলে? দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর: ঘোষীভবন হলো এমন একটি ধ্বনি পরিবর্তন, যেখানে অঘোষ ধ্বনি ঘোষ ধ্বনিতে রূপান্তরিত হয়।
দৃষ্টান্ত: তাম্র > তামা (এখানে 'ম্র' ধ্বনির পরিবর্তনে ঘোষীভবন ঘটে 'মা' হয়েছে)।
৩২. উপসর্গ কাকে বলে? দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর: উপসর্গ হলো এমন কিছু শব্দাংশ যা শব্দের মূল অংশের আগে বসে তার অর্থ পরিবর্তন করে বা বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে।
দৃষ্টান্ত: ‘অ-’ (যেমন: অশান্ত, এখানে 'অ-' অর্থ ‘না’)।
৩৩. কৃদন্ত ও তদ্ধিতান্ত শব্দ কাকে বলে?
উত্তর:
👉 কৃদন্ত শব্দ: ধাতুর সঙ্গে কৃৎ প্রত্যয় যোগে যে শব্দ গঠিত হয় তাকে কৃদন্ত শব্দ বলে।
দৃষ্টান্ত: কর + তৃ = কর্তৃ।
👉 তদ্ধিতান্ত শব্দ: মূল শব্দের সাথে তদ্ধিত প্রত্যয় যোগ করে যে শব্দ গঠিত হয় তাকে তদ্ধিতান্ত শব্দ বলে।
দৃষ্টান্ত: রাম + আণ = রামায়ণ।
৩৪. স্বরভক্তি কাকে বলে? দৃষ্টান্ত দাও।
উত্তর: উচ্চারণের সুবিধার জন্য যখন দুটি ব্যঞ্জনধ্বনির মাঝে একটি স্বরধ্বনির আগমন
ঘটে তখন তাকে মধ্যস্বরাগম বা স্বরভক্তি বা বিপ্রকর্ষ বলে।
যেমন-রত্ন>রতন, স্বপ্ন>সপন।
৩৫. 'দ্বি-স্বর' বা 'যুগ্মস্বর' কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর: 'জি-স্বর' বা 'যুগ্মস্বর' বলতে এমন দুটি স্বরধ্বনির মিলনকে বোঝানো হয়, যা একসঙ্গে উচ্চারিত হয় এবং একটি মাত্র ধ্বনিরূপ ধারণ করে।
উদাহরণ: ‘ঐ’, ‘ঔ’ ইত্যাদি।
৩৬. স্বরসংগতি কয় প্রকার ও কী কী? উদাহরণ দাও।
উত্তর: এটি মূলত চার প্রকারের: প্রগত, পরাগত, মধ্যগত এবং অন্যোন্য।
- প্রগত স্বরসংগতি (Progressive Vowel Harmony):পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির প্রভাবে পরবর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন হলে, তাকে প্রগত স্বরসংগতি বলে। যেমন: মুলা > মুলো, পূজা > পুজো, জুতা > জুতো।
- পরবর্তী স্বরধ্বনির প্রভাবে পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির পরিবর্তন হলে, তাকে পরাগত স্বরসংগতি বলে। যেমন: দেশি > দিশি, বিলাতি > বিলিতি।
- শব্দমধ্যের স্বরের প্রভাবে শব্দ প্রান্তের স্বরের পরিবর্তন হলে, তাকে মধ্যগত স্বরসংগতি বলে।
- পূর্ববর্তী ও পরবর্তী উভয় স্বরধ্বনির প্রভাবে শব্দে পরিবর্তন ঘটলে, একে অন্যোন্য স্বরসংগতি বলে। যেমন: ধোঁকা > ধুঁকা, ডুবো > ডোবা।
৩৭. কন্যা > কইনা > কনে – ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ রীতি অনুসৃত হয়েছে?
উত্তর: এখানে 'অভিশ্রুতি' রীতির উদাহরণ পাওয়া যায়। 'কন্যা' শব্দটি উচ্চারণে সহজ করার জন্য ধ্বনির পরিবর্তন ঘটেছে।
৩৮. ‘প্লুতস্বর’ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: যখন কোনো স্বরধ্বনিকে অতি দীর্ঘ রূপে উচ্চারণ করা হয়, তখন তাকে প্লুতস্বর বলে। যেমন: কাউকে দূর থেকে ডাকার জন্য ব্যবহৃত 'ওহেএএএএএএএ' শব্দে এ স্বরটি প্লুতস্বর।
৩৯. ধ্বনি ও বর্ণের মধ্যে পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
👉 ধ্বনি: এটি হলো ভাষার ক্ষুদ্রতম শ্রবণযোগ্য একক যা শ্রবণ করা যায়। উদাহরণ: ‘ক’, ‘ত’, ‘ম’।
👉 বর্ণ: এটি হলো ধ্বনির লিখিত বা চিহ্নিত রূপ যা লেখা বা পড়া যায়। উদাহরণ: ক, ত, ম।
৪০. শব্দের আদিতে স্বরাগমের একটি উদাহরণ দাও।
উত্তর: শব্দের আদিতে স্বরাগমের (Prothesis) একটি উদাহরণ হল "স্কুল" থেকে "ইস্কুল"। উচ্চারণের সুবিধার জন্য বা অন্য কোনো কারণে শব্দের শুরুতে স্বরধ্বনি যোগ হলে তাকে আদি স্বরাগম বলে।
৪১. ‘অভিশ্রুতি’ কাকে বলে? উদাহরণ দাও।
উত্তর: অপিনিহিতির প্রভাবজাত 'ই' অথবা 'উ' ধ্বনি পূর্ববর্তী স্বরধ্বনির সঙ্গে মিলে শব্দের পরিবর্তন ঘটালে তখন তাকে অভিশ্রুতি বলা হয়।একটি ভাষার শব্দ, গঠন বা ধ্বনি অন্য ভাষায় গিয়ে পরিবর্তিত হলে তাকে অভিশ্রুতি বলে।যেমন- কন্যা > কইনা > কনে।
৪২. অলাবু > লাউ – এটি ধ্বনি পরিবর্তনের কোন্ রীতির দৃষ্টান্ত?
উত্তর: এটি হলো 'আদি স্বরালোপ'। মূল শব্দের ধ্বনি পরিবর্তিত হয়ে সহজ উচ্চারণে রূপান্তরিত হয়েছে।
৪৩. ‘ল’ কোন্ ধরনের ধ্বনি?
উত্তর: ‘ল’ একটি পার্শ্বিক ধ্বনি, কারণ এটি উচ্চারণের সময় জিভের এক দিক থেকে বাতাস বের হয়ে আসে।
<<<<<<<<<<<<<<🌹 সমাপ্ত 🌹>>>>>>>>>>>>