✍️রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৫):
📝 1. অ্যার্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদের তিনটি বৈশিষ্ট্য লেখো। অ্যাম্ফিবিয়া শ্রেণির অন্তর্গত দুটি প্রাণীর নাম লেখো।
✅ উত্তর:
👉অ্যার্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদের তিনটি বৈশিষ্ট্য:
১. অ্যার্থ্রোপোডা পর্বের প্রাণীদের দেহে সুস্পষ্ট খণ্ডায়ন থাকে এবং প্রতিটি খণ্ডে একজোড়া যৌগিক উপাঙ্গ থাকে।
২. এদের দেহ শক্ত বহিঃকঙ্কাল (এক্সোস্কেলেটন) দ্বারা আচ্ছাদিত, যা কাইটিন দ্বারা গঠিত এবং দেহকে সুরক্ষা ও দৃঢ়তা দেয়।
৩. এদের দেহ সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত—মস্তক, বক্ষ ও উদর; অধিকাংশের যৌগিক চোখ ও অ্যান্টেনা থাকে।
👉অ্যাম্ফিবিয়া শ্রেণির অন্তর্গত দুটি প্রাণীর নাম: ব্যাঙ ও সালামান্ডার।
📝 2. লিনিয়ান হায়ারার্কির বৈশিষ্ট্য লেখো। প্রোটিস্টার দুটি উদাহরণ দাও।
✅ উত্তর:
👉লিনিয়ান হায়ারার্কির বৈশিষ্ট্য:
১. লিনিয়ান হায়ারার্কি হলো জীবজগতকে শ্রেণিবদ্ধ করার একটি সুশৃঙ্খল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, যা ক্যারোলাস লিনিয়াস প্রবর্তন করেছিলেন।
২. এই পদ্ধতিতে জীবদের শ্রেণিবিন্যাস ধাপে ধাপে বৃহৎ গোষ্ঠী থেকে ক্ষুদ্র গোষ্ঠীতে সাজানো হয়—কিংডম, ফাইলাম, ক্লাস, অর্ডার, ফ্যামিলি, জেনাস ও স্পিসিস।
৩. প্রতিটি ধাপের নিজস্ব বৈশিষ্ট্য থাকে, এবং যত নিচের স্তরে নামা হয়, তত বেশি মিল পাওয়া যায় জীবগুলির মধ্যে।
৪. এটি জীববিজ্ঞানে নামকরণ ও পরিচয়ের আন্তর্জাতিক মানদণ্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
👉প্রোটিস্টার দুটি উদাহরণ: অ্যামিবা ও প্যারামিসিয়াম।
📝 3. জাইলেম ও ফ্লোয়েমের দুটি পার্থক্য লেখো। বৃক্কের কাজগুলি লেখো।
✅ উত্তর:
👉জাইলেম ও ফ্লোয়েমের পার্থক্য:
১. জাইলেম মূলত শিকড় থেকে গাছের অন্যান্য অংশে পানি ও খনিজ পদার্থ পরিবহন করে, ফ্লোয়েম পাতায় প্রস্তুত খাদ্যকে গাছের বিভিন্ন অংশে পৌঁছে দেয়।
২. জাইলেম টিস্যু প্রধানত মৃত কোষ দ্বারা গঠিত, ফ্লোয়েম জীবন্ত কোষ দ্বারা গঠিত।
👉বৃক্কের কাজ:
১. রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ যেমন ইউরিয়া, ইউরিক অ্যাসিড ইত্যাদি ছেঁকে বের করে।
২. শরীরে জল ও লবণের ভারসাম্য বজায় রাখে।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
৪. রক্তের অম্ল-ক্ষার ভারসাম্য রক্ষা করে।
📝 4. ভাজক কলার তিনটি বৈশিষ্ট্য ও দুটি কাজ লেখো।
✅ উত্তর:
👉ভাজক কলার বৈশিষ্ট্য:
১. ভাজক কলার কোষগুলি বিভাজনক্ষম ও ছোট আকারের হয়।
২. কোষগুলির প্রোটোপ্লাজম ঘন এবং কেন্দ্রীয় নিউক্লিয়াস থাকে।
৩. কোষ প্রাচীর পাতলা হয় এবং আন্তঃকোষীয় ফাঁক অনুপস্থিত থাকে।
👉ভাজক কলার কাজ:
১. নতুন কোষ উৎপাদন করে উদ্ভিদের বৃদ্ধি সাধন।
২. ক্ষতস্থান পূরণ ও অঙ্গ পুনর্গঠনে সহায়তা।
📝 5. উদ্ভিদের রেচনের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো। উপক্ষারের তিনটি অর্থকরী গুরুত্ব লেখো।
✅ উত্তর:
👉উদ্ভিদের রেচনের বৈশিষ্ট্য:
১. রেচনের মাধ্যমে উদ্ভিদ শরীরের অপ্রয়োজনীয় বা বিষাক্ত পদার্থ বাইরে নির্গত করে।
২. রেচন প্রক্রিয়া বিশেষ অঙ্গ যেমন রন্ধ্র, হাইডাথোড, গ্রন্থিলোমা ইত্যাদির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়।
👉উপক্ষারের অর্থকরী গুরুত্ব:
১. ফুলের সৌন্দর্য ও সুগন্ধ দ্বারা কীটপতঙ্গ আকর্ষণ করে পরাগায়নে সহায়তা করা।
২. পাতায় রজন, সুগন্ধি তেল বা নিঃসৃত পদার্থ সংরক্ষণ করে উদ্ভিদকে রোগজীবাণু ও শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করা।
৩. ঔষধি, সুগন্ধি ও শিল্পক্ষেত্রে উপক্ষারের নিঃসৃত পদার্থের ব্যবহার।
📝 6. রক্ততঞ্চন কীভাবে ঘটে? লোহিত রক্তকণিকার দুটি কাজ লেখো।
✅ উত্তর:
👉রক্ততঞ্চন প্রক্রিয়া:
১. রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হলে প্লেটলেট সক্রিয় হয়ে থ্রম্বোপ্লাস্টিন নিঃসরণ করে।
২. থ্রম্বোপ্লাস্টিন রক্তে উপস্থিত প্রোথ্রম্বিনকে থ্রম্বিনে রূপান্তরিত করে, যা ক্যালসিয়ামের উপস্থিতিতে ঘটে।
৩. থ্রম্বিন ফাইব্রিনোজেনকে ফাইব্রিনে পরিবর্তন করে এবং ফাইব্রিন জালের মধ্যে রক্তকণিকা আটকে জমাট বাঁধে।
👉লোহিত রক্তকণিকার কাজ:
১. ফুসফুস থেকে দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পরিবহন।
২. দেহের কোষ থেকে ফুসফুসে কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিবহন।
📝 7. যক্ষ্মারোগের লক্ষণগুলি লেখো। পেস্টদের জৈবিক নিয়ন্ত্রণে জীবাণুদের ভূমিকা আলোচনা করো।
✅ উত্তর:
👉যক্ষ্মারোগের লক্ষণ:
১. দীর্ঘস্থায়ী কাশি, বিশেষত রক্তমিশ্রিত কাশি।
২. অবিরাম জ্বর ও রাতের ঘাম হওয়া।
৩. ওজন হ্রাস ও শারীরিক দুর্বলতা।
👉পেস্টদের জৈবিক নিয়ন্ত্রণে জীবাণুর ভূমিকা:
১. কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস নির্দিষ্ট পোকামাকড়ের জীবনচক্র ধ্বংস করে কৃষিজ ফসলকে রক্ষা করে।
২. বিটি (Bacillus thuringiensis) ব্যাকটেরিয়া অনেক ক্ষতিকর শূককীটের বিরুদ্ধে কার্যকর।
৩. জৈবিক নিয়ন্ত্রণে জীবাণুর ব্যবহার পরিবেশবান্ধব এবং রাসায়নিক কীটনাশকের প্রয়োজন কমায়।
📝 8. সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহারের তিনটি সুবিধা লেখো। জল সংরক্ষণের চারটি উপায় লেখো।
✅ উত্তর:
👉সৌরবিদ্যুতের সুবিধা:
১. এটি পুনর্নবীকরণযোগ্য ও অবিনাশী শক্তির উৎস।
২. উৎপাদনের সময় কোনো দূষণ সৃষ্টি করে না।
৩. বিদ্যুতের খরচ কমায় এবং দীর্ঘমেয়াদে সাশ্রয়ী।
👉জল সংরক্ষণের উপায়:
১. বৃষ্টির জল সংরক্ষণ (রেইনওয়াটার হারভেস্টিং) ব্যবস্থা গ্রহণ।
২. সেচে আধুনিক পদ্ধতি যেমন ড্রিপ ও স্প্রিঙ্কলার সেচ ব্যবহার।
৩. জল অপচয় রোধে সচেতনতা বৃদ্ধি।
৪. নদী, পুকুর ও জলাধার সংরক্ষণ ও পুনর্গঠন।
📝 9. খাদ্যসংকটের মোকাবিলা করার জন্য খাদ্যের বিকল্প উৎস কী কী হতে পারে আলোচনা করো।
✅ উত্তর:
১. সামুদ্রিক শৈবাল ও মাইক্রোঅ্যালগি চাষ করে প্রোটিন ও ভিটামিনের চাহিদা মেটানো যায়।
২. পোকামাকড় যেমন ঘাসফড়িং, মিলওয়ার্ম ইত্যাদি উচ্চ প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য হিসেবে ব্যবহারযোগ্য।
৩. সোয়া, মটরশুঁটি ইত্যাদি ডালজাত ফসল থেকে উদ্ভিদ প্রোটিন প্রক্রিয়াজাত করে মাংসের বিকল্প তৈরি করা যায়।
৪. ল্যাব-উত্পাদিত (কৃত্রিম) মাংস ভবিষ্যতের জন্য টেকসই খাদ্য উৎস হতে পারে।
৫. জলজ প্রাণী যেমন মাছ ও শামুকের চাষ বৃদ্ধি করে প্রাণিজ প্রোটিন সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়।