✍️সংক্ষিপ্ত প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-২):
১. একটি পেনের পিছনের দিক অপেক্ষা নিবের সাহায্যে সহজেই একটি কাগজে ছিদ্র করা যায় – ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: একটি পেনের নিবের অংশ অপেক্ষাকৃত সরু এবং এর পিছনের দিক অপেক্ষাকৃত চওড়া। একই বল প্রয়োগ করলে চাপ () নিবের অংশে বেশি হয়, কারণ এর ক্ষেত্রফল কম। চাপ বেশি হওয়ার ফলে কাগজ সহজেই ছিদ্র হয়।
২. একটি জলে দ্রাব্য পদার্থের নাম ও একটি কেরোসিনে দ্রাব্য পদার্থের নাম লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, জলে দ্রাব্য পদার্থ: লবণ
দ্বিতীয়ত, কেরোসিনে দ্রাব্য পদার্থ: গ্রীস
৩. প্রদত্ত যৌগগুলির সংকেত লেখো : (a) অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড, (b) ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড।
উত্তর:
প্রথমত, অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড: Al₂O₃
দ্বিতীয়ত, ম্যাগনেশিয়াম ক্লোরাইড: MgCl₂
৪. আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্র ও ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রের দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রে দৃশ্যমান আলো ব্যবহার করা হয়, কিন্তু ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্রে উচ্চ-শক্তির ইলেকট্রন রশ্মি ব্যবহার করা হয়।
দ্বিতীয়ত, আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের ক্ষমতা প্রায় ২০০০ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে পারে, কিন্তু ইলেকট্রন অণুবীক্ষণ যন্ত্র প্রায় ১০ লক্ষ গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করতে সক্ষম।
৫. আদর্শ নিউক্লিয়াসের গঠন সংক্ষেপে লেখো।
উত্তর: নিউক্লিয়াস সাধারণত গোলাকার বা ডিম্বাকার হয় এবং এটি ডাবল মেমব্রেন দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকে। নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে নিউক্লিওপ্লাজম থাকে, যেখানে নিউক্লিওলাস ও ক্রোমাটিন ফাইবার উপস্থিত থাকে। ক্রোমাটিন ফাইবার ডিএনএ ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত এবং এটি কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোজোমে রূপান্তরিত হয়।
৬. লোহিত রক্তকণিকার আকার গোল ও দুপাশ চ্যাপটা চাকতির মতো হওয়ার সুবিধা কী?
উত্তর:
প্রথমত, এই আকৃতির ফলে লোহিত রক্তকণিকার পৃষ্ঠের ক্ষেত্রফল বৃদ্ধি পায়, যা অক্সিজেন ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়।
দ্বিতীয়ত, এটি সংকুচিত হয়ে সরু কৈশিক নালির মধ্য দিয়ে সহজে প্রবাহিত হতে পারে, ফলে শরীরের প্রতিটি কোষে অক্সিজেন দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব হয়।
৭. গন্ধের সাহায্যে অ্যামোনিয়া গ্যাস ও হাইড্রোজেন সালফাইড এই দুটি গ্যাসকে কীভাবে শনাক্ত করবে?
উত্তর:
প্রথমত, অ্যামোনিয়া গ্যাসের গন্ধ তীব্র, উগ্র ও ঝাঝালো, যা সহজেই নাকে লাগে।
দ্বিতীয়ত, হাইড্রোজেন সালফাইডের গন্ধ পচা ডিমের মতো, যা খুবই দুর্গন্ধযুক্ত ও সহজেই শনাক্তযোগ্য।
৮. উদাহরণসহ আইসোটোপের সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: যে সমস্ত পরমাণুর প্রোটন সংখ্যা একই কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন, তাদের আইসোটোপ বলে। অর্থাৎ, তারা একই মৌলভুক্ত হলেও ভরসংখ্যায় পার্থক্য থাকে।
উদাহরণ: হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ— প্রোটিয়াম (), ডিউটেরিয়াম (), ট্রিটিয়াম ()।
৯. মহাকর্ষ বল সংক্রান্ত গাণিতিক সম্পর্কটি লেখো। সর্বজনীন মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের SI এককটি উল্লেখ করো।
উত্তর: মহাকর্ষ বলের গাণিতিক সম্পর্ক:
যেখানে,
= দুই বস্তুর মধ্যে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল,
= সর্বজনীন মহাকর্ষীয় ধ্রুবক,
ও = দুই বস্তুর ভর,
= বস্তুদ্বয়ের মধ্যে দূরত্ব।
সর্বজনীন মহাকর্ষীয় ধ্রুবকের SI একক:
১০. আর্কিমিডিসের নীতিটি লেখো।
উত্তর: আর্কিমিডিসের নীতি অনুসারে, যখন কোনো বস্তু সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো তরলে নিমজ্জিত থাকে, তখন তা উপরের দিকে একটি অভিকর্ষ-বিরোধী বল অনুভব করে, যার মান নিমজ্জিত বস্তুর দ্বারা সরানো তরলের ওজনের সমান।
১১. প্রাণীকলা কয়প্রকার ও কী কী? প্রত্যেক প্রকারের নাম লেখো।
উত্তর: প্রাণীকলা প্রধানত চার প্রকার।
প্রথমত, আবরনী কলা (Epithelial Tissue)
দ্বিতীয়ত, যোগ কলা (Connective Tissue)
তৃতীয়ত, পেশি কলা (Muscular Tissue)
চতুর্থত, স্নায়ু কলা (Nervous Tissue)
১২. কোশপর্দা ও কোশপ্রাচীরের একটি মিল ও একটি অমিল উল্লেখ করো।
উত্তর:
মিল: উভয়ই কোষকে ঘিরে রাখে এবং অভ্যন্তরীণ অংশকে রক্ষা করে।
অমিল: কোশপর্দা সকল কোষে থাকে, কিন্তু কোশপ্রাচীর শুধু উদ্ভিদ ও ব্যাকটেরিয়ার কোষে থাকে এবং এটি কোশপর্দার তুলনায় শক্ত ও অনমনীয়।
১৩. অভিকর্ষজ ত্বরণ বলতে কী বোঝায়? SI-তে অভিকর্ষজ ত্বরণের এককসহ মান লেখো।
উত্তর: কোনো বস্তুর ওপর পৃথিবীর অভিকর্ষ বলের কারণে সৃষ্ট ত্বরণকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে। এটি পৃথিবীর অভিকর্ষীয় বলের কারণে বস্তুর গতিবেগ পরিবর্তনের হার প্রকাশ করে।
SI একক:
পৃথিবীর পৃষ্ঠে গড় অভিকর্ষজ ত্বরণ:
১৪. রাসায়নিক সংকেত লেখো : ফেরিক অক্সাইড, ক্যালশিয়াম হাইড্রক্সাইড।
উত্তর:
প্রথমত, ফেরিক অক্সাইড: Fe₂O₃
দ্বিতীয়ত, ক্যালশিয়াম হাইড্রক্সাইড: Ca(OH)₂
১৫. চিত্রসহ হাইড্রোজেন অণুর সমযোজী বন্ধন দেখাও।
উত্তর:
H₂ অণুতে সমযোজী বন্ধন:
হাইড্রোজেন পরমাণুর অভ্যন্তরে ১টি ইলেকট্রন থাকে, তাই এটি ২টি ইলেকট্রন সম্পূর্ণ করতে অন্য একটি হাইড্রোজেন পরমাণুর সঙ্গে সমযোজী বন্ধন গঠন করে।
(চিত্র সংযুক্ত করতে হবে)
১৬. খুব শুকনো ও গরম পরিবেশে বসবাসকারী উদ্ভিদের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, এই উদ্ভিদগুলির পাতাগুলি কাঁটায় পরিণত হয়, যাতে জলসংরক্ষণ হয়।
দ্বিতীয়ত, এদের কাণ্ড মসৃণ ও রসালো হয়, যা জল সংরক্ষণে সাহায্য করে।
১৭. দুটি পর্দাবিহীন কোশীয় অঙ্গাণুর নাম ও তাদের কাজ লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, রাইবোজোম – এটি প্রোটিন সংশ্লেষণে সাহায্য করে।
দ্বিতীয়ত, সেন্ট্রিওল – এটি কোষ বিভাজনের সময় স্পিন্ডল তন্তু গঠনে সাহায্য করে।
১৮. স্থির অবস্থার ঘর্ষণ বা স্থিত ঘর্ষণ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: দুটি বস্তুর সংযোগস্থলে, কোনো বস্তু চলমান হওয়ার পূর্বে যে সর্বাধিক ঘর্ষণ বল কার্যকর হয়, তাকে স্থিত ঘর্ষণ বলে। এটি বস্তুকে স্থির রাখতে সাহায্য করে।
১৯. ভৌত ধর্ম ও রাসায়নিক ধর্মের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, ভৌত ধর্মে পদার্থের বাহ্যিক রূপ পরিবর্তিত হয়, কিন্তু রাসায়নিক ধর্মে পদার্থের গঠন পরিবর্তিত হয়।
দ্বিতীয়ত, ভৌত ধর্ম পরিবর্তিত হলে নতুন পদার্থ তৈরি হয় না, কিন্তু রাসায়নিক ধর্ম পরিবর্তিত হলে নতুন পদার্থ তৈরি হয়।
২০. পরমাণুটিতে ইলেকট্রন ও নিউট্রনের সংখ্যা কত?
উত্তর:
প্রথমত, ইলেকট্রন সংখ্যা = প্রোটন সংখ্যা = ৭
দ্বিতীয়ত, নিউট্রন সংখ্যা = ভর সংখ্যা – প্রোটন সংখ্যা = ১৪ – ৭ = ৭
২১. ভাজক কলা কাকে বলে? স্নায়ু কলার একটি কাজ লেখো।
উত্তর:
ভাজক কলা হল উদ্ভিদের একটি বিশেষ ধরনের কোষগুচ্ছ, যা ক্রমাগত বিভাজিত হয়ে নতুন কোষ উৎপন্ন করে ও উদ্ভিদের বৃদ্ধি সাধন করে।
স্নায়ু কলার কাজ: এটি উদ্দীপনা গ্রহণ ও স্নায়ুর মাধ্যমে বার্তা পরিবহণে সাহায্য করে।
২২. ঘর্ষণ বলের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, ঘর্ষণ বল সর্বদা বস্তুর গতির বিপরীত দিকে কাজ করে।
দ্বিতীয়ত, এটি দুটি পৃষ্ঠের পরস্পরের সংস্পর্শের রুক্ষতার উপর নির্ভর করে।
২৩. ধাতু এবং অধাতুর মধ্যে অন্তত দুটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, ধাতু বিদ্যুৎ ও তাপের ভাল পরিবাহক, কিন্তু অধিকাংশ অধাতু বিদ্যুৎ ও তাপের দুর্বল পরিবাহক।
দ্বিতীয়ত, ধাতু নমনীয় ও প্রসার্য হয়, কিন্তু অধিকাংশ অধাতু ভঙ্গুর হয়।
২৪. ভাজক কলার দুটি কাজ লেখো।
উত্তর:
প্রথমত, এটি নতুন কোষ উৎপন্ন করে উদ্ভিদের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে।
দ্বিতীয়ত, এটি শাখা-প্রশাখা ও মূলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
২৫. অ্যান্টিফ্রিজ প্রোটিন কোথায় থাকে? এর কাজ কী?
উত্তর: অ্যান্টিফ্রিজ প্রোটিন কিছু মাছ, ব্যাঙ, উদ্ভিদ ও ব্যাকটেরিয়ার মধ্যে পাওয়া যায়, বিশেষত যেগুলি বরফাচ্ছন্ন অঞ্চলে বসবাস করে।
এর কাজ হল কোষের অভ্যন্তরীণ তরল জমে যাওয়া রোধ করা, ফলে প্রাণী বা উদ্ভিদ তীব্র ঠান্ডায়ও বেঁচে থাকতে পারে।
২৬. 1 esu-এর সংজ্ঞা দাও।
উত্তর: 1 esu (Electrostatic Unit) হল চার্জের মৌলিক গৌণ একক, যা তখন সংজ্ঞায়িত হয় যখন শূন্যস্থানে ১ cm দূরত্বে দুটি সমান স্থির চার্জের মধ্যে ক্রিয়া করা বল ১ ডাইন হয়।
২৭. একটি ছোটো পেরেকের টুকরো বালতির জলে ফেললে সেটি ডুবে যায়। অথচ পেরেকের চাইতে অনেক ভারী একটি স্টিলের বাটি বালতির জলে ভাসে কেন?
উত্তর: ছোটো পেরেকের গড় ঘনত্ব জলের ঘনত্বের চেয়ে বেশি হওয়ায় এটি জলে ডুবে যায়। কিন্তু স্টিলের বাটির আকার বড় হওয়ায়, এটি জলে একটি বৃহত্তর স্থানচ্যুতি ঘটায় এবং আর্কিমিডিসের নীতি অনুযায়ী, তার ওপর ততটাই ঊর্ধ্বমুখী অভ্যন্তরীণ প্রবাহ বল কাজ করে, যা তার ওজনের সমান হওয়ার ফলে এটি জলে ভেসে থাকে।
২৮. শীতকালে শুকনো চুল আঁচড়ানোর পর, সঙ্গে সঙ্গে চিরুনিটিকে কয়েকটি কাগজের টুকরোর খুব কাছে আনলে কী ঘটবে এবং কেন?
উত্তর: চিরুনি শুকনো চুলের সাথে ঘর্ষণের ফলে স্থির বিদ্যুৎ অর্জন করে এবং চার্জিত হয়ে যায়। এটি কাগজের ছোট ছোট টুকরোগুলিকে আকর্ষণ করতে পারে, কারণ কাগজের টুকরোগুলি তড়িৎ-আবেশের মাধ্যমে বিপরীত চার্জ ধারণ করে। ফলে কাগজের টুকরোগুলি চিরুনির দিকে টানতে শুরু করে।
২৯. ‘আত্মঘাতী থলি’ কাকে বলে এবং কেন?
উত্তর: লাইসোজোমকে ‘আত্মঘাতী থলি’ বলা হয়।
কারণ, এতে উপস্থিত হাইড্রোলাইটিক এনজাইম কোষের অভ্যন্তরীণ বর্জ্য ও অবাঞ্ছিত উপাদানকে ভেঙে ফেলে। কোনো কারণে যদি লাইসোজোম ফেটে যায়, তাহলে তার এনজাইম কোষের অন্যান্য অংশকে ক্ষয় করে কোষকে ধ্বংস করে দিতে পারে। তাই এটি ‘আত্মঘাতী থলি’ নামে পরিচিত।
৩০. মহাকর্ষ ও অভিকর্ষের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর:
প্রথমত, মহাকর্ষ হল যে কোনো দুটি বস্তু বা বস্তুকণার মধ্যে ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বল, যা তাদের ভরের কারণে উৎপন্ন হয়। কিন্তু অভিকর্ষ হল পৃথিবী বা অন্য কোনো গ্রহের কেন্দ্রের দিকে বস্তুদের প্রতি ক্রিয়াশীল আকর্ষণ বল।
দ্বিতীয়ত, মহাকর্ষ যে কোনো দুটি বস্তুর মধ্যে কাজ করে, তবে অভিকর্ষ নির্দিষ্টভাবে পৃথিবী বা অন্য গ্রহের পৃষ্ঠে বস্তুদের উপর কাজ করে।
৩১. নিউক্লিয়াসের কয়টি অংশ ও কী কী?
উত্তর: নিউক্লিয়াস মূলত চারটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত:
প্রথমত, নিউক্লিয়ার আবরণ বা পর্দা (Nuclear Membrane): এটি নিউক্লিয়াসকে ঘিরে রাখে এবং নিউক্লিয়াস ও সাইটোপ্লাজমের মধ্যে পদার্থ আদান-প্রদানে সাহায্য করে।
দ্বিতীয়ত, নিউক্লিওপ্লাজম (Nucleoplasm): এটি নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে থাকা তরল পদার্থ, যেখানে নিউক্লিওলাস ও ক্রোমাটিন বিদ্যমান থাকে।
তৃতীয়ত, নিউক্লিওলাস (Nucleolus): এটি নিউক্লিয়াসের অভ্যন্তরে উপস্থিত থাকে এবং রাইবোজোম সংশ্লেষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
চতুর্থত, ক্রোমাটিন বা জালিকা (Chromatin): এটি ডিএনএ ও প্রোটিন দিয়ে গঠিত এবং কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমোসোমে পরিণত হয়।
৩২. টিকাকরণ কাকে বলে?
উত্তর: টিকাকরণ হল এক বিশেষ প্রক্রিয়া, যেখানে দেহে জীবাণুর দুর্বল বা নিষ্ক্রিয় অংশ প্রবেশ করিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। এটি দেহে প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি তৈরি করতে সাহায্য করে, যা ভবিষ্যতে ওই নির্দিষ্ট রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়ক হয়। টিকাকরণের ফলে দেহ দীর্ঘমেয়াদী বা আজীবন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জন করতে পারে।
৩৩. গলগি বস্তু ও সেন্ট্রোজোমের একটি করে কাজ লেখ।
উত্তর: গলগি বস্তু কোষের অভ্যন্তরে প্রোটিন ও লিপিড সংশ্লেষণ ও পরিবহণে সাহায্য করে।
সেন্ট্রোজোম কোষ বিভাজনের সময় কশিকা তন্তু (Spindle fiber) গঠনে সহায়তা করে।
৩৪. প্লাস্টিড কয় প্রকার ও কী কী?
উত্তর: প্লাস্টিড মূলত তিন প্রকার—
১. ক্লোরোপ্লাস্ট: এতে ক্লোরোফিল থাকে এবং এটি সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়া পরিচালনা করে।
২. ক্রোমোপ্লাস্ট: বিভিন্ন বর্ণের রঞ্জক ধারণ করে এবং ফুল ও ফলে রঙ প্রদান করে।
৩. লিউকোপ্লাস্ট: এতে কোনো রঞ্জক থাকে না এবং এটি শ্বেতসার, তেল ও প্রোটিন সংরক্ষণ করে।
৩৫. একটি লোহার পেরেককে কপার সালফেটের দ্রবণে ডোবালে কী হবে? সমীকরণসহ লেখ।
উত্তর: লোহা কপার সালফেটের সঙ্গে বিক্রিয়া করে কপারকে মুক্ত করে এবং নিজে লোহা সালফেটে পরিণত হয়। ফলে দ্রবণের নীল রং ধীরে ধীরে ফিকে হয়ে যায়।
রাসায়নিক সমীকরণ:
Fe + CuSO₄ → FeSO₄ + Cu↓
৩৬. জলে লোহার বল ডুবে যায়, কিন্তু বড় লোহার জাহাজ ভাসে কেন?
উত্তর: লোহার বলের গড় ঘনত্ব জলের চেয়ে বেশি, তাই এটি ডুবে যায়।
অন্যদিকে, লোহার জাহাজের গঠন ফাঁপা থাকে, ফলে এর গড় ঘনত্ব জলের চেয়ে কম হয়, যার কারণে এটি জলে ভেসে থাকে।
৩৭. জিংকের গুঁড়োর সঙ্গে লঘু H₂SO₄ যোগ করা হলে কী হবে?
উত্তর: জিংক লঘু সালফিউরিক অ্যাসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া করে জিংক সালফেট ও হাইড্রোজেন গ্যাস উৎপন্ন করে।
রাসায়নিক সমীকরণ:
Zn + H₂SO₄ → ZnSO₄ + H₂↑
৩৮. প্লবতা কাকে বলে?
উত্তর: কোনো তরলে নিমজ্জিত বস্তুটির ওপর যে ঊর্ধ্বমুখী অভ্যন্তরীণ বল ক্রিয়াশীল হয়, তাকে প্লবতা বলে। এটি আর্কিমিডিসের নীতি অনুযায়ী বস্তু দ্বারা স্থানচ্যুত তরলের ওজনের সমান হয়।
৩৯. নিউটনের মহাকর্ষ সূত্রটি লেখ।
উত্তর: দুটি বস্তু একে অপরকে আকর্ষণ করে, যা তাদের ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং তাদের মধ্যবর্তী দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক।
গাণিতিক সম্পর্ক:
৪০. পরমাণু কী কী কণা নিয়ে গঠিত? নিউক্লিয়াস কাকে বলে?
উত্তর: পরমাণু তিনটি মৌলিক কণিকা দ্বারা গঠিত—
১. প্রোটন (p⁺) – ধনাত্মক চার্জযুক্ত।
২. নিউট্রন (n⁰) – কোনো চার্জ নেই।
৩. ইলেকট্রন (e⁻) – ঋণাত্মক চার্জযুক্ত।
নিউক্লিয়াস হল পরমাণুর কেন্দ্রীয় অংশ, যেখানে প্রোটন ও নিউট্রন থাকে এবং এটি পরমাণুর ভরের প্রধান অংশ গঠন করে।
৪১. অ্যামোনিয়া এবং হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসকে কীভাবে শনাক্ত করবে?
উত্তর:
১. অ্যামোনিয়া গ্যাস (NH₃): ভেজা লাল লিটমাস কাগজ এর সামনে ধরলে এটি নীল হয়ে যাবে।
২. হাইড্রোজেন সালফাইড (H₂S): সীসা অ্যাসিটেট কাগজ এর সামনে ধরলে এটি কালো রঙ ধারণ করবে।
৪২. কপার সালফেট দ্রবণে একটি লোহার পেরেক ডুবিয়ে রাখলে কী হবে এবং কেন?
উত্তর: লোহার প্রতিক্রিয়াশীলতা কপারের চেয়ে বেশি, তাই লোহা কপার সালফেটের সঙ্গে বিক্রিয়া করে কপারকে মুক্ত করে। ফলে পেরেকের উপর তামার লালচে আস্তরণ পড়ে এবং দ্রবণের নীল রং ফিকে হয়ে যায়।
রাসায়নিক সমীকরণ:
Fe + CuSO₄ → FeSO₄ + Cu↓
৪৩. উদ্ভিদ কোষ ও প্রাণী কোষের দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর:
১. উদ্ভিদ কোষে কোশপ্রাচীর থাকে, কিন্তু প্রাণী কোষে এটি অনুপস্থিত।
২. উদ্ভিদ কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে, যা সালোকসংশ্লেষণে সাহায্য করে, কিন্তু প্রাণী কোষে ক্লোরোপ্লাস্ট থাকে না।
✍️সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও(প্রশ্নের মান-৩):
১. একটি আদর্শ নিউক্লিয়াসের চিত্র অঙ্কন করে উল্লিখিত অংশ দুটি চিহ্নিত করো :
(a) ক্রোমাটিন জালিকা
(b) নিউক্লিওলাস
২. আইসোটোপ এবং আইসোবারের সংজ্ঞা দাও এবং প্রত্যেকটির একটি করে উদাহরণ দাও।
উত্তর:
1️⃣ আইসোটোপ (Isotope): একই মৌলিক পদার্থের সেই সকল পরমাণুকে আইসোটোপ বলে, যাদের প্রোটন সংখ্যা সমান কিন্তু নিউট্রন সংখ্যা ভিন্ন।
উদাহরণ: হাইড্রোজেনের তিনটি আইসোটোপ হলো – প্রোটিয়াম (), ডিউটেরিয়াম (), এবং ট্রিটিয়াম ()।
2️⃣ আইসোবার (Isobar): বিভিন্ন মৌলিক পদার্থের সেই সকল পরমাণুকে আইসোবার বলে, যাদের ভরসংখ্যা সমান কিন্তু পারমাণবিক সংখ্যা ভিন্ন।
উদাহরণ: পটাশিয়াম () এবং ক্যালশিয়াম ()।
৩. ক্যালশিয়াম ফসফেটের সংকেত লেখো এবং আয়নে বিশ্লিষ্ট করো ও দেখাও যৌগটির মোট আধান শূন্য।
উত্তর:
1️⃣ ক্যালশিয়াম ফসফেটের সংকেত:
2️⃣ আয়নে বিশ্লিষ্টকরণ:
3️⃣ মোট আধান শূন্য দেখানো:
→ ক্যালসিয়াম আয়নের মোট আধান:
→ ফসফেট আয়নের মোট আধান:
মোট আধান: (শূন্য)
তাই, ক্যালশিয়াম ফসফেট একটি তড়িৎ-নিরপেক্ষ যৌগ।
৪.বাধাহীনভাবে পতনশীল বস্তুর ক্ষেত্রে গ্যালিলিয়োর সূত্রগুলি লেখো।
উত্তর: অবাধে পতনশীল বস্তুর জন্য গ্যালিলিও যে সূত্রগুলো প্রদান করেছিলেন, সেগুলো হলো—
প্রথম সূত্র: কোনো বস্তু যদি শূন্যস্থানে (বায়ুশূন্য মাধ্যমে) একই উচ্চতা থেকে এবং স্থির অবস্থা থেকে পড়তে শুরু করে, তবে সেটি সবসময় সমান দ্রুততায় নিচে নেমে আসে। অর্থাৎ, বস্তুটির ভর নির্বিশেষে পতনের হার একই থাকে।
দ্বিতীয় সূত্র: কোনো বস্তু যদি স্থির অবস্থা থেকে অবাধে পড়তে শুরু করে, তবে তার বেগ () পতনের সময়কাল () এর সমানুপাতিক হয়। অর্থাৎ, যত বেশি সময় ধরে বস্তুটি পড়বে, তার বেগও তত বেশি বাড়বে। গাণিতিকভাবে,
তৃতীয় সূত্র: স্থির অবস্থা থেকে অবাধে পতনশীল বস্তু নির্দিষ্ট সময়ে যে দূরত্ব () অতিক্রম করে, তা পতনের সময়কাল () এর বর্গের সমানুপাতিক। অর্থাৎ, সময়ের দ্বিগুণ হলে পতিত দূরত্ব চারগুণ হয়ে যাবে। গাণিতিকভাবে,
৫.একটি আদর্শ উদ্ভিদকোশের চিহ্নিত চিত্র অঙ্কন করো।
৬. নাইট্রিক অক্সাইডের সঙ্গে একটি বর্ণহীন গ্যাসীয় মৌলের বিক্রিয়ায় একটি বাদামি বর্ণের গ্যাসীয় যৌগ উৎপন্ন হয়। মৌলটিকে ও যৌগটিকে শনাক্ত করো এবং রাসায়নিক সমীকরণটি লেখো।
উত্তর:
1️⃣ মৌল: অক্সিজেন ()
2️⃣ যৌগ: নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড () (বাদামি বর্ণের গ্যাস)
রাসায়নিক সমীকরণ:
এখানে নাইট্রিক অক্সাইড () অক্সিজেনের () সঙ্গে বিক্রিয়া করে নাইট্রোজেন ডাই অক্সাইড () উৎপন্ন করে, যা একটি বাদামি বর্ণের গ্যাস।
৭. পাতিত জলে ক্যালশিয়াম যোগ করে রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটানোর পর উৎপন্ন দ্রবণে নীল লিটমাস কাগজ ডোবালে কী ঘটবে? রাসায়নিক সমীকরণের সাহায্যে ব্যাখ্যা দাও।
উত্তর:
1️⃣ বিক্রিয়া: পাতিত জলে ক্যালশিয়াম () যোগ করলে এটি জলের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ক্যালশিয়াম হাইড্রোক্সাইড () উৎপন্ন করে।
রাসায়নিক সমীকরণ:
2️⃣ লিটমাস পরীক্ষার ফলাফল:
→ ক্যালশিয়াম হাইড্রোক্সাইড () একটি ক্ষারীয় দ্রবণ, যা নীল লিটমাস কাগজে কোনো পরিবর্তন ঘটাবে না, তবে লাল লিটমাস কাগজকে নীল করে দেবে।
৮.এসআই পদ্ধতিতে জলের ঘনত্ব নির্ণয় কর।
উত্তর:
জলের ঘনত্ব নির্ণয়ের জন্য আমরা এসআই পদ্ধতির মৌলিক সংজ্ঞা ব্যবহার করব।
1️⃣ ঘনত্বের সূত্র:
2️⃣ জলের ঘনত্ব:
অর্থাৎ, এসআই এককে বিশুদ্ধ জলের ঘনত্ব ।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
জলের ঘনত্ব তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল। ৪°C তাপমাত্রায় বিশুদ্ধ জলের ঘনত্ব সর্বাধিক, যা ।
<<<<<<<<<<<<<<🌹 সমাপ্ত 🌹>>>>>>>>>>>>