📚বি.এ দর্শন মেজর-2: SEMESTER-II: সাজেশন:PART-1(উত্তরসহ)📚

✍️প্রশ্নমান-২:

প্রশ্ন:অনুমান কী?

উত্তর : অন্নং ভট্ট তর্কসংগ্রহে অনুমানের লক্ষণে বলেছেন “অনুমিতিকরণম্অনুমানম্”। অর্থাৎ অনুমিতি জ্ঞানের করণকে অনুমান বলে। অন্নং ভট্ট তর্কসংগ্রহ গ্রন্থে অনুমিতির লক্ষণে বলেছেন “পরামর্শজন্যং জ্ঞানম্অনুমিতিঃ।” অর্থাৎ পরামর্শ হতে উৎপন্ন যে জ্ঞান তাই হল অনুমিতি ।

প্রশ্ন:উপমান কী ?

উত্তর : ন্যায়সূত্র-এ মহর্ষি গৌতম উপমিতির লক্ষণে বলেছেন “প্রসিদ্ধ সাধর্ম্যাৎ সাধ্যসাধনমঃ উপমানম্।” অর্থাৎ কোন পদার্থে প্রসিদ্ধ পদার্থের সাদৃশ্য প্রত্যক্ষ হলে কোনো সাধ্য পদার্থের যে নিশ্চয়াত্মক অনুভব হয়, তাই উপমিতি এবং তার করণ হল উপমান প্রমাণ। অন্নং ভট্ট তর্কসংগ্রহ গ্রন্থে উপমিতি জ্ঞানের করণকে উপমান বলেছেন।

প্রশ্ন:ন্যায় মতে প্রত্যক্ষ কী ?

উত্তর : ন্যায় মতে প্রত্যক্ষ শব্দটি যেমন প্রত্যক্ষ প্রমাণকে বোঝায় তেমনই প্রত্যক্ষ প্রমাকেও বোঝায়। মহির্ষ গৌতম তাঁর ন্যায়সূত্রে প্রত্যক্ষের লক্ষণে বলেছেন—“ইন্দ্রিয়ার্থ সন্নিকর্ষোৎপন্নং জ্ঞানম্ অব্যাপদেশ্য অব্যভিচারী ব্যবসায়ত্মকম্, প্রত্যক্ষম্।” অর্থাৎ ইন্দ্রিয় এবং অর্থের সন্নিকর্ষের ফলে যে অব্যাপ্যদেশ্য (অশাব্দ), অব্যভিচারী (অভ্রান্ত) এবং ব্যবসায়াত্মক (নিশ্চয়াত্মক) জ্ঞান উৎপন্ন হয়, তাই প্রত্যক্ষ।

প্রশ্ন:সংযোগ সন্নিকর্ষ কী ?

উত্তর : দ্রব্যের প্রত্যক্ষ হয় যে সন্নিকর্ষের দ্বারা তা হল সংযোগ সন্নিকর্ষ। ইন্দ্রিয়ের দ্বারা বিষয়ের প্রত্যক্ষস্থলে যদি ইন্দ্রিয় এবং বিষয় উভয়ই দ্রব্য হয় তাহলে সেক্ষেত্রে যে সন্নিকর্ষটি হয় তা হল সংযোগ। কারণ ন্যায়মতে সংযোগ একটি গুণ পদার্থ এবং দুটি দ্রব্যের মধ্যে সম্বন্ধ হল সংযোগ। যেমন—চক্ষু ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে যখন ঘটের সম্বন্ধ হয়, তখন চক্ষু ইন্দ্রিয় দ্রব্য এবং ঘটও দ্রব্য হওয়ার এক্ষেত্রে সন্নিকর্ষটি হল সংযোগ-সন্নিকর্ষ।

প্রশ্ন:ন্যায়মতে শব্দ প্রত্যক্ষে কী ধরনের সন্নিকর্ষ প্রয়োজন হয়?

উত্তর : শব্দের প্রত্যক্ষ হয় শ্রবণেন্দ্রিয়ের দ্বারা। ন্যায়মতে কর্ণবিবরবর্তী আকাশকেই শ্রবণেন্দ্রিয় বলা হয়। আকাশ দ্রব্য এবং শব্দ হল আকাশের গুণ। ন্যায়মতে দ্রব্য এবং গুণের সম্বন্ধ হল সমবায়। সুতরাং, শ্রবণেন্দ্রিয়ের দ্বারা শব্দের প্রত্যক্ষে সন্নিকর্ষ হল সমবায় সন্নিকর্ষ।

প্রশ্ন: ন্যায় মতে প্রমা কী ?

উত্তর : ন্যায় মতে প্রমা হল অসন্দিগ্ধ যথার্থ অনুভব। বিষয় যে ধর্ম বিশিষ্ট জ্ঞানে যদি সেই ধর্মই ভাসিত হয় তাহলে সেই জ্ঞান বা অনুভব হয় যথার্থ অনুভব।এরই ন্যায়সম্মত পারিভাষিক নাম হল প্রমা।

প্রশ্ন: ন্যায় মতে প্রমা কটি ও কী কী ?

উত্তর : প্রমা হল অসন্দিগ্ধ যথার্থ অনুভব। ন্যায় মতে যথার্থ জ্ঞান চার প্রকার—প্রত্যক্ষণ, অনুমিতি, উপমিতি এবং শাব্দবোধ ।

প্রশ্ন: ন্যায় মতে প্রমাণ কটি ও কী কী?

উত্তর : প্রমা হল অসন্দিগ্ধ যথার্থ অনুভব। যে প্রণালী দ্বারা প্রমা বা যথার্থ জ্ঞান লাভ করা যায় তাকেই প্রমাণ বলা হয়। ন্যায় মতে যথার্থ জ্ঞান চারপ্রকার-প্রত্যক্ষণ, অনুমিতি, উপমিতি এবং শাব্দবোধ। ফলে এই চারপ্রকার যথার্থ জ্ঞানের করণ বা প্রমাণও যথাক্রমে চারপ্রকার – প্রত্যক্ষ, অনুমান, উপমান এবং শব্দ।

প্রশ্ন: প্রত্যক্ষের কারণ ও করণ কী?

উত্তর : নব্য ন্যায় মতে প্রত্যক্ষের কারণ হল বিষয়েন্দ্রিয় সংযোগ এবং করণ হল ইন্দ্রিয়। আর প্রাচীন ন্যায় মতে প্রত্যক্ষের কারণ হল ইন্দ্রিয় এবং করণ হল বিষয়েন্দ্রিয় সংযোগ।

প্রশ্ন:প্রত্যক্ষ কয় প্রকার ও কী কী?

উত্তর : ন্যায় দর্শনে প্রত্যক্ষকে নানাভাবে শ্রেণীবিভাগ করা হয়েছে। প্রত্যক্ষণ প্রধানত দুই প্রকার—(১) লৌকিক ও (২) অলৌকিক। আবার আন্তর ও বাহ্য প্রত্যক্ষ ভেদে লৌকিক প্রত্যক্ষ দুই প্রকার। একদিক থেকে বাহ্য প্রত্যক্ষ পাঁচ প্রকার—চাক্ষুষ, শ্রাবণ, ঘ্রাণজ, রাসন ও ত্বাচ প্রত্যক্ষ। এবং সামান্যলক্ষণ, জ্ঞানলক্ষণ ও যোগজলক্ষণ প্রত্যক্ষ ভেদে অলৌকিক প্রত্যক্ষ তিন প্রকার ।

প্রশ্ন:বিকল্প কয়টি ও কী কী ?

উত্তর : দার্শনিক পরিভাষায় ‘বিকল্প’শব্দের অর্থ হল বিশেষণ। দ্রব্য, নাম, জাতি, গুণ ও ক্রিয়া—এই পাঁচটি বিশেষণ ন্যায় দর্শনে 'বিকল্প' নামে পরিচিত।

প্রশ্ন:অলৌকিক প্রত্যক্ষ কাকে বলে?

উত্তর : যে প্রত্যক্ষণে বিষয়ের সঙ্গে ইন্দ্রিয়ের স্বাভাবিক সংযোগ বা লৌকিক সন্নিকর্ষ না হয়ে অসাধারণ উপায়ে প্রত্যক্ষণ হয়, তাকেই অলৌকিক প্রত্যক্ষ বলা হয়।

To be continued........