📚 অষ্টম শ্রেণির ভূগোল সাজেশন উত্তরসহ: তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ণ:পার্ট-৩📚
1.বহুরূপী পশ্চিমা বায়ুগুলির নাম লেখো। সেগুলি কোথায় প্রবাহিত হয়?
উত্তর:👉বহুরূপী পশ্চিমা বায়ুগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য নামগুলি হল জেট ধারা (Jet Stream), গর্জনকারী চল্লিশ (Roaring Forties), ক্রুদ্ধ পঞ্চাশ (Furious Fifties), এবং চিৎকারকারী ষাট (Screaming Sixties)।
👉 এই বায়ুগুলি সাধারণত ৩০° থেকে ৬০° অক্ষাংশের মধ্যে মাঝারি অক্ষাংশ অঞ্চলে প্রবাহিত হয়। জেট ধারা উচ্চ গতির বায়ুপ্রবাহ, যা ট্রপোস্ফিয়ারের উপরের স্তরে থাকে। গর্জনকারী চল্লিশ, ক্রুদ্ধ পঞ্চাশ, এবং চিৎকারকারী ষাট মূলত দক্ষিণ গোলার্ধের মহাসাগরীয় অঞ্চলে প্রবাহিত হয়।
উত্তর: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলকে 'ফলের ঝুড়ি' বলা হয় কারণ এখানে ঋতুভেদে উপযুক্ত আবহাওয়া এবং মাটি থাকার কারণে বিভিন্ন ধরনের ফল উৎপাদন হয়। এই অঞ্চলে গরম ও শুকনো গ্রীষ্ম এবং মৃদু ও স্যাঁতসেঁতে শীতকাল থাকে, যা ফলের চাষের জন্য আদর্শ। বিশেষত দ্রাক্ষালতা, জলপাই, নারকেল, আখ, পাকা ফল, এবং বাদামসহ নানা ধরনের ফল উৎপাদিত হয়। এসব কারণে ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল কৃষি ও ফলের উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ এবং "ফলের ঝুড়ি" হিসেবে পরিচিত।
3.স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে কী বোঝো?
উত্তর: স্থিতিশীল উন্নয়ন বলতে এমন একটি উন্নয়নকে বোঝায় যা পরিবেশ, অর্থনীতি এবং সমাজের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে। এর উদ্দেশ্য হলো বর্তমান প্রজন্মের চাহিদা পূরণ করা, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য প্রাকৃতিক সম্পদ এবং পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলা না। এটি প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ, সামাজিক ন্যায় এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করার মাধ্যমে অর্জিত হয়। স্থিতিশীল উন্নয়ন এমন একটি উন্নয়ন পদ্ধতি, যা সকলের জন্য দীর্ঘমেয়াদী মঙ্গল সাধন করে।
4.নিউজিল্যান্ডের ভূপ্রকৃতি সম্পর্কে যা জানো, লেখো।
উত্তর: নিউজিল্যান্ডের ভূপ্রকৃতি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় এবং আকর্ষণীয়। এটি দুটি প্রধান দ্বীপ, উত্তর দ্বীপ এবং দক্ষিণ দ্বীপ নিয়ে গঠিত। উত্তর দ্বীপে রয়েছে অনেক ভূতাত্ত্বিক সক্রিয় এলাকা, যেমন আগ্নেয়গিরি, গরম জলপ্রপাত এবং সীমানা অঞ্চল। দক্ষিণ দ্বীপে বেশি পরিমাণে পর্বত, হিমবাহ এবং সমুদ্রতীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। এখানকার সর্বোচ্চ পর্বত, কুক মাউন্টেন, ৩৭৩০ মিটার উঁচু। নিউজিল্যান্ডের ভূমি সাধারণত পাহাড়ি এবং উপত্যকাযুক্ত, যার মধ্যে অনেক নদী, হ্রদ ও বনাঞ্চল রয়েছে। দেশটি ক্রান্তীয় জলবায়ুর অধিকারী এবং এটির জলবায়ু খুবই পরিবর্তনশীল, বিশেষত দক্ষিণ ও উত্তর দ্বীপের মধ্যে।
উত্তর: ঘূর্ণবাত এবং প্রতীপ ঘূর্ণবাতের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো তাদের অবস্থান এবং গতির দিক।
ঘূর্ণবাত হল একটি বায়ুপ্রবাহ যা নিম্নচাপ অঞ্চলের দিকে ঘুরে প্রবাহিত হয়, সাধারণত এটি উষ্ণ অঞ্চলে দেখা যায় এবং বায়ু ঘুরে চলার কারণে কেন্দ্রীয় পয়েন্টে নিম্নচাপ তৈরি হয়। প্রতীপ ঘূর্ণবাত, অন্যদিকে, একটি বায়ুপ্রবাহ যা উচ্চচাপ অঞ্চলের দিকে ঘুরে প্রবাহিত হয় এবং এটি সাধারণত শীতল অঞ্চলে দেখা যায়। ঘূর্ণবাতের মধ্যে বায়ু ঘূর্ণায়মান হয় বায়ু কেন্দ্রীয় পয়েন্ট থেকে বাহিরে চলে যায়, কিন্তু প্রতীপ ঘূর্ণবাতের মধ্যে বায়ু কেন্দ্রে আসার দিকে ঘুরে চলে।
6.নিউজিল্যান্ডকে ‘দক্ষিণ গোলার্ধের ব্রিটেন' বলা হয় কেন?
উত্তর: নিউজিল্যান্ডকে ‘দক্ষিণ গোলার্ধের ব্রিটেন’ বলা হয় কারণ এর ভূগোল, জলবায়ু এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ ব্রিটেনের সাথে মিল রয়েছে। নিউজিল্যান্ডের প্রকৃতি এবং আয়তন ব্রিটেনের মতো, এবং এখানে অনেক ব্রিটিশ ঐতিহ্য, ভাষা ও সংস্কৃতি অনুসৃত হয়। ব্রিটেনের ঔপনিবেশিক শাসনের পরও, নিউজিল্যান্ডে ইংরেজি ভাষা এবং ব্রিটিশ আইনব্যবস্থা প্রাধান্য পায়। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ডের পরিবেশে ঋতু পরিবর্তন, মৃদু জলবায়ু এবং প্রকৃতির সুরক্ষা প্রক্রিয়া ব্রিটেনের মতোই। এই কারণে নিউজিল্যান্ডকে ‘দক্ষিণ গোলার্ধের ব্রিটেন’ হিসেবে অভিহিত করা হয়।
7.মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল পৃথিবীর সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চল কেন?
উত্তর: মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চল পৃথিবীর সর্বাধিক জনবহুল অঞ্চল হওয়ার কারণ হলো এই অঞ্চলের উপযুক্ত কৃষিকাজের পরিবেশ এবং অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা। মৌসুমি জলবায়ুর মধ্যে গ্রীষ্মে প্রচুর বৃষ্টি হয়, যা কৃষির জন্য উপযোগী। এই কারণে ধান, গম, ভুট্টা, চিনি এবং অন্যান্য শস্য উৎপাদন সহজ হয়, যা মানুষের খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করে। এর পাশাপাশি, এই অঞ্চলের উষ্ণ জলবায়ু ও সমতল ভূমি বাসস্থান এবং পরিবহন ব্যবস্থার জন্য সুবিধাজনক, ফলে এখানকার মানুষ অর্থনৈতিকভাবে সুসংহত হয়ে ওঠে। ভারতের উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, এবং পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অঞ্চল মৌসুমি জলবায়ু দ্বারা প্রভাবিত, যা জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সহায়ক।
8.পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ অবনমনের তিনটি পার্থক্য লেখো।
উত্তর:
1. অর্থ: পরিবেশ দূষণ হলো ক্ষতিকর পদার্থের উপস্থিতি, আর পরিবেশ অবনমন হলো প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষতি।
2. কারণ: দূষণের কারণ হলো শিল্প, যানবাহন, কৃষি, আর অবনমনের কারণ হলো বন উজাড় ও অতিরিক্ত নগরায়ন।
3. প্রভাব: দূষণ মানুষের স্বাস্থ্যে ক্ষতি করে, আর অবনমন প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতি করে।
উত্তর:
1. স্থলবায়ু উষ্ণ এবং দ্রুত পরিবর্তিত হয়, সমুদ্র বায়ু আর্দ্র এবং ধীরে পরিবর্তিত হয়।
2. স্থলবায়ু ভূমির উপর চাপ সৃষ্টি করে, সমুদ্র বায়ু সমুদ্রের উপর।
3. স্থলবায়ু তাপমাত্রা দ্রুত পরিবর্তিত করে, সমুদ্র বায়ু মৃদু তাপমাত্রা বজায় রাখে।
উত্তর: ভূমধ্যসাগরীয় জলবায়ু অঞ্চলের উদ্ভিদগুলি সাধারণত মাঝারি আকারের, যেমন জলপাই গাছ, আখ ইত্যাদি। গরম গ্রীষ্মকাল এবং শুষ্ক পরিবেশে এরা সহনশীল, এবং শুষ্ককালীন জলাভাব মোকাবিলা করার জন্য বিশেষভাবে অভিযোজিত। উদ্ভিদগুলির শিকড় গভীরে প্রবাহিত হয়, যা জল শোষণ ক্ষমতা বাড়ায়। এদের পাতা সরু বা তীক্ষ্ণ থাকে, যাতে জল বাষ্পীভবন কমানো যায় এবং শীতল পরিবেশে টিকে থাকা সহজ হয়। জলপাই, আঙ্গুর, তরমুজ, ভিনেগার গাছ প্রভৃতি এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য উদ্ভিদ।
উত্তর: 1. বন সংরক্ষণ ও বৃক্ষরোপণ: বন উজাড় বন্ধ করে এবং নতুন গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা।
2. সতর্কতা ও সচেতনতা সৃষ্টি: মানুষের মধ্যে পরিবেশ রক্ষা এবং সঠিক ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধি করা, যেমন বর্জ্য কমানো এবং পুনঃব্যবহার।
3. টেকসই কৃষি পদ্ধতির প্রচলন: ভূমি ক্ষয় রোধে সার্বিক কৃষি উন্নয়ন, যেমন জৈব কৃষির ব্যবহার ও সেচ ব্যবস্থার উন্নতি।
12.তুন্দ্রা জলবায়ুর অবস্থান ও জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য লেখো।
উত্তর: তুন্দ্রা জলবায়ু প্রধানত আর্কটিক অঞ্চল, অ্যান্টার্কটিকা এবং উচ্চ পর্বতাঞ্চলে দেখা যায়। এখানে শীতকাল দীর্ঘ এবং তীব্র, তাপমাত্রা -৪০° সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে, এবং গ্রীষ্মকাল সংক্ষিপ্ত ও ঠান্ডা। বৃষ্টিপাত কম, সাধারণত ১৫০ মিমি বা তার কম, এবং অধিকাংশ বৃষ্টি তুষার বা বরফ আকারে হয়। এই অঞ্চলে গাছপালা কম, তবে মস, লিচেন ও ঘাস দেখা যায়। প্রাণী হিসেবে Arctic fox, polar bear, reindeer এবং কিছু পাখি এখানে বাস করে।
উত্তর: কাটাবেটিক বায়ু এবং অ্যানাবেটিক বায়ু এর মধ্যে তিনটি প্রধান পার্থক্য:
1. কাটাবেটিক বায়ু উচ্চভূমি থেকে নিচে প্রবাহিত হয়, অ্যানাবেটিক বায়ু নিচ থেকে উপরে উঠে।
2. কাটাবেটিক বায়ু শীতল, অ্যানাবেটিক বায়ু উষ্ণ।
3. কাটাবেটিক বায়ু রাতে বা শীতকালে ঘটে, অ্যানাবেটিক বায়ু দিনে বা গরম আবহাওয়ায় ঘটে।
উত্তর: তুন্দ্রা জলবায়ু অঞ্চলের অধিবাসীরা সাধারণত শীতপ্রধান এবং কঠিন পরিবেশে জীবনযাপন করে। তাদের প্রধান পেশা হলো মহিষপালন, মাছ ধরা, এবং কিছু ক্ষেত্রে ভুট্টা ও অন্যান্য শস্য চাষ। তারা সাধারণত গরম কাপড় পরে এবং ঘরবাড়ি তৈরি করতে বরফ বা তুষারের ঘর ব্যবহার করে। শীতকালে, খাবারের জন্য তাদের জীবিকার প্রধান উৎস হলো পশুপালন এবং মাংস খাওয়া, যেখানে মাছ, মাংস এবং মোটা কাপড় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়াও, তাদের জীবনে পরিবার ও সমাজের সহায়তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
15.বিশ্ব উষ্ণায়নের তিনটি প্রভাব আলোচনা করো।
উত্তর: বিশ্ব উষ্ণায়নের তিনটি প্রধান প্রভাব হল:
-
পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি: উষ্ণায়নের ফলে গ্লোবাল তাপমাত্রা বাড়ছে, যার ফলে গ্রীষ্মকাল আরও গরম এবং শীতকাল উষ্ণ হতে পারে।
-
সমুদ্র স্তরের বৃদ্ধি: মেরু অঞ্চলের বরফ গলতে থাকার কারণে সমুদ্রের পানির স্তর বাড়ছে, যা উপকূলীয় এলাকায় বন্যা এবং ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করছে।
-
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বৃদ্ধি: বিশ্ব উষ্ণায়নের ফলে ঘূর্ণিঝড়, খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে, যা কৃষি, পানি সরবরাহ এবং মানুষের জীবনযাত্রার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
উত্তর: মারে ডার্লিং অববাহিকার প্রাকৃতিক পরিবেশ অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। এটি অস্ট্রেলিয়ার অন্যতম প্রধান নদী অববাহিকা, যেখানে দুটি প্রধান নদী, মারে ও ডার্লিং, মিলিত হয়েছে। এই অঞ্চলের ভূপ্রকৃতি মূলত সমতল এবং উপত্যকাযুক্ত, যেখানে অনেকে বড় বড় নদী এবং পলি-ঢাকা ভূমি রয়েছে। মারে নদী হল অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘতম নদী, যা বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের মধ্যে প্রবাহিত হয়ে সাগরে পতিত হয়। জলবায়ু অঞ্চলের ক্ষেত্রে, এটি একটি মিশ্র জলবায়ু অঞ্চল, যেখানে গরম গ্রীষ্মকাল এবং ঠান্ডা শীতকাল বিরাজমান। বর্ষাকালেও এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম, ফলে জলাভূমি অঞ্চলে কিছুটা শুষ্ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়। স্বাভাবিক উদ্ভিদ হিসেবে এখানে বিস্তৃত ঘাসের মাঠ, ইউক্যালিপটাস গাছ, এবং কিছু স্থানীয় গুল্ম উদ্ভিদ দেখা যায়। তবে, এখানে চারণভূমি এবং কৃষিকাজের জন্য অনেকটা ভূমি পরিবর্তন করা হয়েছে। এই অঞ্চলটি জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ, যেখানে বিভিন্ন ধরনের পশু, যেমন কাংগারু, কোয়ালা, এবং নানা ধরনের পাখি বাস করে।
উত্তর: মারে-ডার্লিং অববাহিকার অর্থনৈতিক উন্নতির কারণগুলো হল:
1. সেচ ব্যবস্থা: মারে-ডার্লিং নদী অববাহিকায় সেচ ব্যবস্থার উন্নতি কৃষির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই অঞ্চলে সেচ সুবিধা পাওয়ার ফলে ধান, গম, তুলা এবং ফলমূলের চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আয় এবং কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করেছে।
2. বাণিজ্যিক কৃষি: মারে-ডার্লিং অঞ্চলে বাণিজ্যিক কৃষির প্রসার ঘটে। এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদিত হয় এবং সেগুলি রপ্তানি করা হয়, যার ফলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হয়েছে।
3. নদী দ্বারা পরিবহন: মারে-ডার্লিং নদী একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা বিভিন্ন শিল্প ও কৃষিপণ্য পরিবহন সহজ করে তোলে। এটি ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করেছে।
4. শিল্প বিকাশ: নদী অঞ্চলের আশেপাশে বিভিন্ন ধরনের শিল্প যেমন চিনি, সুতির কাপড়, এবং খনিজ আহরণ সহ অন্যান্য শিল্প গড়ে উঠেছে, যা এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি ত্বরান্বিত করেছে।
5. বিপণন ও পর্যটন: নদী সংলগ্ন এলাকাগুলো পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এবং এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ঐতিহাসিক স্থানগুলির কারণে পর্যটন শিল্পও অর্থনৈতিক উন্নতির সহায়ক হয়েছে।
এই সব কারণের সমন্বয়ে মারে-ডার্লিং অববাহিকার অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটেছে।
3.পরিবেশ অবনমনের হাত থেকে রক্ষা পেতে, ক্ষুদ্রভাবে হলেও আমরা কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি?
উত্তর: পরিবেশ অবনমনের হাত থেকে রক্ষা পেতে আমরা কিছু ক্ষুদ্র পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি। প্রথমত, বর্জ্য পুনঃব্যবহার এবং কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্লাস্টিকের ব্যবহার কমিয়ে, পুনঃব্যবহারযোগ্য সামগ্রী ব্যবহার করা উচিত। দ্বিতীয়ত, গাছপালা রোপণ করে বায়ু পরিষ্কার রাখা এবং কার্বন ডাইঅক্সাইড শোষণ করা সম্ভব। তৃতীয়ত, জল সংরক্ষণ করতে হবে, যেমন বৃষ্টির জল ধরার ব্যবস্থা করা এবং অযথা পানি অপচয় রোধ করা। চতুর্থত, নবায়নযোগ্য শক্তি যেমন সৌরশক্তি এবং বায়ুশক্তির ব্যবহার বাড়ানো উচিত, যা পরিবেশের ওপর চাপ কমায়। পঞ্চমত, পরিবহন ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা, যেমন সাইকেল ব্যবহার বা পাবলিক ট্রান্সপোর্টের মাধ্যমে যানবাহন ব্যবহারের পরিমাণ কমানো। ছয়, খাদ্য উৎপাদন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে হবে। এসব ছোট পদক্ষেপ পরিবেশ রক্ষা এবং অবনমন ঠেকাতে সহায়ক হতে পারে।
4.নিরক্ষীয় জলবায়ুর বৈশিষ্ট্য আলোচনা করো।
উত্তর: নিরক্ষীয় অঞ্চলে তাপমাত্রা সাধারণত উচ্চ থাকে, গড় তাপমাত্রা ২০° সেলসিয়াস থেকে ৩০° সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে এবং সারা বছর গরম পরিবেশ বজায় থাকে। এখানে বৃষ্টিপাত অনেক বেশি হয়, বিশেষত বর্ষাকালে, এবং বৃষ্টিপাত প্রায় নিয়মিত। এই অঞ্চলে তিনটি ঋতু থাকে – গরম, বৃষ্টির মৌসুম এবং শুষ্ক মৌসুম, তবে ঋতুগুলোর মধ্যে তেমন পার্থক্য দেখা যায় না। বায়ুপ্রবাহ ধীরগতি এবং শীতল বা গরম বাতাসের পরিবর্তন কম হয়। উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের বৈচিত্র্য অত্যন্ত বেশি, বিশেষ করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় বৃষ্টিপ্রবণ বনাঞ্চলে। এখানে উচ্চ আর্দ্রতা এবং মেঘমালা দেখা যায়। নিরক্ষীয় জলবায়ুর কারণে এই অঞ্চলে কৃষি ও জীববৈচিত্র্য খুবই উন্নত।
5.পরিবেশ অবনমনের কারণ আলোচনা করো।
উত্তর: পরিবেশ অবনমনের কারণগুলো হল:
1. বনের নিধন: বনভূমির ব্যাপক কাটাই ও দখল পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে। বনাঞ্চল সরে যাওয়ার ফলে জীববৈচিত্র্য হ্রাস পায় এবং মাটির ক্ষয় বাড়ে।
2. দূষণ: শিল্পকারখানা, যানবাহন এবং বিভিন্ন উৎপাদন কার্যক্রমের মাধ্যমে বায়ু, পানি ও মাটিতে দূষণ ছড়ায়। এটি পরিবেশের স্বাস্থ্য ও জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
3. অতিরিক্ত খনিজ আহরণ: মাটি ও খনিজ সম্পদের অতিরিক্ত আহরণ মাটির গুণগত মান কমিয়ে দেয় এবং ভূমির ক্ষয় সৃষ্টি করে, যা পরিবেশ অবনমনের কারণ।
4. কৃষির সম্প্রসারণ: কৃষির জন্য বনভূমি উন্মুক্ত করা, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে মাটির উর্বরতা কমে যায় এবং জলবায়ু পরিবর্তন ঘটে।
5. জলবায়ু পরিবর্তন: বিশ্ব উষ্ণায়ন ও জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যা বন্যা, খরা, তাপপ্রবাহের মতো বিপর্যয়ের সৃষ্টি করে।
6. অপ্রয়োজনীয় ও অনিয়ন্ত্রিত আবাসন নির্মাণ: প্রাকৃতিক বাস্তুতন্ত্রের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং জীববৈচিত্র্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
এইসব কারণে পরিবেশ অবনমনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য হুমকি সৃষ্টি করছে।
6.এস্কিমোদের জীবনযাত্রার সাম্প্রতিক পরিবর্তনগুলি আলোচনা করো।
উত্তর:
1. আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার: Eskimoরা সেলফোন, কম্পিউটার, গাড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করছে, যা তাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করেছে।
2. বৈশ্বিক উষ্ণায়ন: আর্কটিক অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়ছে, যা শিকার ও মাছ ধরার কাজকে আরও কঠিন করে তুলছে।
3. আধুনিক পেশায় যুক্ত হওয়া: ঐতিহ্যবাহী শিকারী জীবন ছেড়ে অনেক Eskimo আধুনিক পেশায় যেমন সরকারি চাকরি বা ব্যবসায় যুক্ত হচ্ছেন।
4. সাংস্কৃতিক পরিবর্তন: পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবে তাদের জীবনধারা এবং ভাষায় পরিবর্তন এসেছে, তবে তারা ঐতিহ্য রক্ষার চেষ্টা করছেন।
5. শিকার ও মাছ ধরার পরিবর্তন: পরিবেশগত পরিবর্তন এবং আধুনিক জীবনযাত্রার কারণে শিকার এবং মাছ ধরার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসছে।
7.মারে-ডার্লিং অববাহিকা অঞ্চলে পশুপালনে উন্নতির কারণ লেখ।
উত্তর: মারে-ডার্লিং অববাহিকা অঞ্চলে পশুপালনে উন্নতির কারণ:
- উর্বর মাটি: মাটি উর্বর এবং সেচের ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় ঘাসের বৃদ্ধি ভালো হয়, যা পশুপালনের জন্য উপযোগী।
- প্রযুক্তির ব্যবহার: আধুনিক প্রযুক্তি ও ব্যবস্থাপনার কারণে পশু পালন আরও লাভজনক ও উন্নত হয়েছে।
- ভূমির বিস্তৃতি: এই অঞ্চলে বড় আকারের খামার ও বিস্তৃত চারণভূমি রয়েছে, যা পশুপালনের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেছে।
- আধুনিক খাদ্য সরবরাহ: পশুদের জন্য উন্নত খাদ্য এবং স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা উপলব্ধ হওয়ায় পশুপালন আরও লাভজনক হয়েছে।
- অর্থনৈতিক সুবিধা: পশু থেকে প্রাপ্ত দুধ, মাংস এবং অন্যান্য উপকরণ বাজারে ভালো দাম পায়, যা কৃষকদের জন্য আয়ের একটি স্থায়ী উৎস।
8.ওশিয়ানিয়ার নদ-নদী সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের নদ-নদীগুলি প্রধানত ছোট আকারের এবং এই অঞ্চলের জলবায়ু ও ভূপ্রকৃতির কারণে নদীগুলি দ্রুত প্রবাহিত হয়। অস্ট্রেলিয়ায় মারে এবং ডার্লিং নদী দুটি গুরুত্বপূর্ণ। মারে নদী অস্ট্রেলিয়ার দীর্ঘতম নদী, যা দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া, নিউ সাউথ ওয়েলস এবং ভিক্টোরিয়া রাজ্য বরাবর প্রবাহিত হয়। এই নদী কৃষি, জলের সরবরাহ এবং পরিবহন ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ডার্লিং নদী মারে নদীর শাখা এবং এটি দক্ষিণ-পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রবাহিত হয়। নিউ জিল্যান্ডের নদীগুলির মধ্যে ওতাকি এবং হোয়াংগানুই নদী দুটি উল্লেখযোগ্য। এই নদীগুলি বরফ গলানোর মাধ্যমে জল সংগ্রহ করে এবং দ্রুত প্রবাহিত হয়। ওশিয়ানিয়া অঞ্চলের দ্বীপগুলিতে ছোট নদী ও জলধারা রয়েছে, যা জল সরবরাহের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তবে, এখানকার নদীগুলির আকার তুলনামূলকভাবে ছোট এবং সীমিত।
9.নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলের জীব বৈচিত্রের বর্ণনা দাও।
উত্তর: নিরক্ষীয় জলবায়ু অঞ্চলে জীববৈচিত্র্য অত্যন্ত সমৃদ্ধ। এই অঞ্চলে গরম এবং আর্দ্র পরিবেশের কারণে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রাচুর্যে পাওয়া যায়। উদ্ভিদগত দিক থেকে, এখানে ঘন বনাঞ্চল এবং উচ্চ গাছের সংখ্যা বেশি, যেমন ট্রপিক্যাল রেইনফরেস্ট। এসব বনে মহাবৃক্ষ যেমন লতা ও বেত গাছ থাকে এবং নিচে ছোট গাছ, শালপাতা, মস, মাশরুম ইত্যাদি দেখা যায়। প্রাণীজগতে, এই অঞ্চলে পাখির সংখ্যা ব্যাপক, বিশেষ করে তিলি, প্যারট এবং অন্যান্য রঙিন পাখি। এছাড়া সাপ, হাতি, বাঘ, জেব্রা, বানর ইত্যাদি স্তন্যপায়ী প্রাণীও পাওয়া যায়। এখানে পোকামাকড়ের সংখ্যা বিপুল, যার মধ্যে মশা, মাকড়সা এবং বিভিন্ন প্রকারের কীটপতঙ্গ উল্লেখযোগ্য। এই অঞ্চলের জলজ প্রাণীও বৈচিত্র্যময়, যেমন ডলফিন, হিপোপটামাস, কুমির এবং বিভিন্ন ধরনের মাছ। জীববৈচিত্র্যের এই সমৃদ্ধি প্রধানত এই অঞ্চলের উষ্ণ এবং আর্দ্র পরিবেশের কারণে সম্ভব।
10.ওশিয়ানিয়া মহাদেশের জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ কর।
উত্তর: ওশিয়ানিয়া মহাদেশের জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ করা হয় প্রধানত পাঁচটি প্রধান শ্রেণীতে:
1. উষ্ণমণ্ডলীয় জলবায়ু: এই জলবায়ু অঞ্চলে বছরের বেশিরভাগ সময় গরম এবং আর্দ্র থাকে। এখানে বৃষ্টি বেশি হয় এবং বছরের বিভিন্ন সময়ে শক্তিশালী তুফান ও ঘূর্ণিঝড় আক্রমণ করতে পারে।
2. মৌসুমি জলবায়ু: এই অঞ্চলে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের প্রভাব দেখা যায়, যেখানে গ্রীষ্মে প্রচুর বৃষ্টি হয়, এবং শীতকালে বৃষ্টি কমে যায়।
3. মেরিন জলবায়ু: এই জলবায়ু অঞ্চলে সমুদ্রের প্রভাবে গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়া থাকে। এখানে তাপমাত্রা সামান্য পরিবর্তিত হয় এবং বৃষ্টি সাধারণত সারা বছরব্যাপী থাকে।
4. মিডিতেরানিয়ান জলবায়ু: এই অঞ্চলের গরম এবং শুষ্ক গ্রীষ্মকাল, এবং ঠান্ডা ও বরফঝরা শীতকাল থাকে। এটি ওশিয়ানিয়ার কিছু অংশে পাওয়া যায়, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে।
5. মাংগ্রোভ জলবায়ু: এই অঞ্চলে ঘন বৃষ্টি এবং উচ্চ তাপমাত্রা থাকে, যা সাধারণত মাংগ্রোভ বনের পরিবেশ সৃষ্টি করে।
এছাড়া, এখানে শুষ্ক ও মরুময় জলবায়ু অঞ্চলও রয়েছে, যেখানে বৃষ্টি কম এবং গরম আবহাওয়া বিরাজ করে।